Bangur Murder Case: পরিচারকের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ বালিশ চাপা দিয়েছিল মুখে! বাঙুরে প্রৌঢ়া খুনে পঞ্জাব থেকে ধৃত আরও ১
Bangur Murder: খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ ও নমুনার ভিত্তিতে পুলিশ নিশ্চিত হয়, লুঠের উদ্দেশেই খুন করা হয়েছিল ওই প্রৌঢ়াকে।
কলকাতা: বাঙুর বি ব্লকের প্রৌঢ়ার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার মূল অভিযুক্ত। পঞ্জাবের জিরাকপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করল লেকটাউন থানার পুলিশ। ধৃতের নাম ইন্দর পাল। শুক্রবার বিধাননগর মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে তাকে। নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে বলে পুলিশ সূত্র মারফত খবর। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৮০,৩০২, ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই খুনের ‘মাস্টার মাইন্ড’ প্রৌঢ়ার পরিচারক (যাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ), তার পূর্ব পরিচিত ইন্দর।
চলতি বছরের ২২ জুলাই বাঙ্গুর বি-ব্লকে বহুতল আবাসনের নীচের তলায় ৬২ বছরের প্রৌঢ়া বিভা মুখোপাধ্যায়ের পচা গলা দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর গলায় গামছা জড়ানো ছিল। পুলিশ যখন তাঁর দেহ উদ্ধার করে, তখন তাঁর মুখে বালিশ চাপা ছিল। মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল লেকটাউন থানার পুলিশ।
খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে পারিপার্শ্বিক তথ্য-প্রমাণ ও নমুনার ভিত্তিতে পুলিশ নিশ্চিত হয়, লুঠের উদ্দেশেই খুন করা হয়েছিল ওই প্রৌঢ়াকে। আরও জানতে পারে যে, এই ঘটনায় দুই বা ততোধিক ব্যক্তি জড়িত ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, যে ঘর থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার হয়, তার পাশের দুটি ঘর লণ্ডভণ্ড ছিল। ঘরের দুটো আলমারি ভাঙা ছিল। কয়েক লক্ষ টাকার সোনার গয়না উধাও ছিল। খোয়া গিয়েছিল নগদ টাকাও। এসবের পরই পুলিশ মনে করে, লুঠের উদ্দেশেই ঘরে ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। লুঠে বাধা দেওয়াতেই খুন হতে হয়েছে ওই প্রৌঢ়াকে।
পুলিশের অনুমান ছিল, এই ঘটনায় প্রৌঢ়ার কোনও পরিচিত জড়িত থাকতে পারে। কারণ কোথায় কী রয়েছে, তা ভালভাবেই জানত অভিযুক্ত। অন্তত লুঠের নমুনা দেখে সে বিষয়ে নিশ্চিত ছিল পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে প্রৌঢ়ার পরিচারককে। বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে গিয়ে ওই পরিচারকের হদিশ পায় পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই অভিযুক্তের বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। তার পরেই পুলিশের একটি দল উত্তরপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেয়। সেখান থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে লেকটাউন থানার ওই তদন্তকারী দলটি। ৩১ জুলাই ঘটনায় অভিযুক্ত পরিচারককে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছিল দুজনে মিলে গলায় গামছা ফাঁস দিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় ওই প্রৌঢ়াকে। লুঠ করা জিনিস নিয়ে ভিন রাজ্যে পালিয়েছিল অভিযুক্তরা। সেই ঘটনায় পাঞ্জাবের জিরাকপুর থেকে ইনদর পালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে খুন ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধৃতকে আগামিকাল বিধান নগর আদালতে পেশ করা হবে। জানা গিয়েছে, ইন্দরই বৃৃদ্ধার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে। পরবর্তীকালে তাঁর পা-ও চেপে ধরে ইন্দর। প্রৌঢ়ার পরিচারকের সঙ্গে আগে এক জায়গায় কাজ করেছে সে। সেখানে থেকেই পরিচয়।
বাঙুর বি ব্লকের ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন প্রৌঢ়া। তাঁর পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র থাকেন। ঘটনার তিন-চার দিন আগে থেকে তাঁকে ফোনে পাচ্ছিলেন না ছেলে। ঘটনার দিন প্রথম ছেলেই মায়ের খবর নিতে ওই ফ্ল্যাটে ঢোকেন। তখনই বিভা মুখোপাধ্যায় নামে ওই প্রৌঢ়ার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। বৃদ্ধার ছেলে ঘরে ঢুকে দেখতে পান, বৃদ্ধার দেহ বিছানায় পড়ে ছিল, দুটি আলমারি ভাঙা, গলায় গামছা জড়ানো ছিল।
আরও পড়ুন: NRS Hospital: এনআরএস হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার লিক, মুহূর্তে ছড়াল আতঙ্ক