কলকাতা: দুর্গোৎসব মানেই লাগামছাড়া আনন্দ। আড্ডা, গান-বাজনা, ভূরিভোজের পাশাপাশি পুজো মণ্ডপগুলিতে ঘুরে বেড়ানো এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ। মহানগরীর বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে রোজই ভিড় জমান লক্ষাধিক মানুষ। জনতার এই স্রোতকে নিয়ন্ত্রণ করতে উৎসবের দিনগুলিতে বিশেষ ভাবে সজাগ থাকতে হয় কলকাতা পুলিশকে। এর পাশাপাশি বেপরোয়া ড্রাইভিং এবং মদ্যপের দাপাদাপি রোখা , মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ঠাকুর দেখতে এসে বিপদে পড়লে তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর কাজ বছরের পর বছর করে যাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। আসন্ন দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি হিসাবেই শনিবার শহরের ৬৭৫টি পুজো কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করল কলকাতা পুলিশ।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালাবে কলকাতা পুলিশ। এর পাশাপাশি প্রচুর পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকবে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। পুজোর সময় রাস্তায় থাকবে কলকাতা পুলিশের উইনার্স টিম। কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরাও রাস্তায় নেমে সক্রিয় ভূমিকা নেবেন। পুজোর দিন গুলিতে রাত যত বাড়ে ততই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বাইকের দৌরাত্ম দেখা যায়। এ বিষয়ে পুলিশকে নজর রাখার কথা জানিয়েছে পুজো কমিটিগুলি। এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনারের আশ্বাস, পুজোর দিনগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালাবেন ট্রাফিকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। বেপরোয়া ড্রাইভিং এবং মদ্যপান করে ড্রাইভিং রোখার জন্যও বিশেষ উদ্যোগ পুলিশ নেবে বলে জানিয়েছেন। রাস্তার আলো বাড়ানোর জন্যও পুলিশকে অনুরোধ করেছে পুজো কমিটিগুলি।
দুর্গাপুজোর সময় কলকাতা পুলিশের তরফে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড করা হবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পুজো মণ্ডপের কাছে। সেই ডিসপ্লে বোর্ডে দর্শনার্থীরা জানতে পারবেন তাঁরা পূজোর লাইনে দাঁড়িয়ে কত সময়ের মধ্যে পুজো প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে পারবেন। আনুমানিক একটি সময় সেই ডিসপ্লেতে দেখতে পারবেন দর্শনার্থীরা। পুজো প্যান্ডেলের প্রবেশ পথ এবং বেরোনোর পথে আলাদা করে নজরদারি চালাবে কলকাতা পুলিশ। হঠাৎ করে কোনও কারণে ভিড় বেশি হলে কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে তারও রূপরেখা তৈরি করবে পুলিশ।
পুজোর মরসুমের আগে থেকেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে ডেঙ্গি পরিস্থিতি। এ বিষয়ে পুজো কমিটিগুলিকে সজাগ থাকতে বলেছেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। কোনও ভাবে যাতে পুজো মণ্ডপ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় জল জমতে না পারে সে দিকে নজর রাখতে বলা হয়েছে।
এ নিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেছেন, “কমিটিগুলি ছোটখাটো কিছু সমস্যার কথা বলেছে। দর্শনার্থীদের কতক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হবে সেই তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করছি। ট্রাফিক, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা থাকবে। নিরাপত্তার জন্য আরও ক্যামেরা লাগানো হবে। উইনার্স টিম থাকবে, সবাই থাকবে। রাত ২টোর পরে বাইকের উপর বিশেষ নজরদারি করবে ট্রাফিক পুলিশ। পুরসভার ডেঙ্গির বিষয়টি নজর রাখবে।”