সুজয় পাল: এবার রাতের শহরেও ট্র্যাফিক সার্জেন্টদের কাছে রাখতে হবে সার্ভিস পিস্তল বা রিভলভার। নির্দেশ দিলেন পুলিশ কমিশনার। বুধবার এই মর্মে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব ট্র্যাফিক গার্ডকে। ট্র্যাফিক গার্ডের নাইট অফিসার যাঁরা নাইট ডিউটি করেন তাঁদের অবিলম্বে সার্ভিস রিভলভার বা পিস্তল সংগ্রহ করতে নির্দেশ দিয়েছেন সিপি। পরবর্তী ধাপে প্রত্যেক সার্জেন্টকেই এই অস্ত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশের মাধ্যমে বহু পুরোনো প্রথা ফিরিয়ে আনা হল। ১৫ বছর আগে বিভিন্ন কারণে ট্র্যাফিক সার্জেন্টদের সার্ভিস রিভলভার বা পিস্তল নিয়ে ডিউটি করা বন্ধ করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের তরফে শহর জুড়ে যে সব জায়গায় নাকা চেকিং হয় সেখানের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়িত্বে থাকেন ট্র্যাফিক সার্জেন্টরা। নাকা চলার সময় অনেক ক্ষেত্রে বেআইনি অস্ত্র পাচার আটকেছেন সার্জেন্টরা। গাড়ি চেকিংয়ের সময় নিজেদের কোনওরকম সুরক্ষা ছাড়াই নাকা চেকিং করেন তাঁরা। কোনও দুষ্কৃতীকে আটকাতে হলে পাল্টা পুলিশের ওপর তাঁরা চড়াও হলে এতদিন নাইট অফিসারদের আত্মরক্ষার কোনও বন্দোবস্ত ছিল না।
অনেক সময় রাতের ডিউটিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও সামলাতে হয়। তখনও খালি হাতে পরিস্থিতি সামলাতে হত। সে কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ। সম্প্রতি বেহালার বুড়োশিবতলায় ট্রাফিক আইন না মেনে বাইক চালানোয় এক যুবককে আটকানোর সার্জেন্টকে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। গত শনিবারের ঘটনা সেটি। শনিবার সন্ধ্যায় এক যুবকের বাইকের পিছনে বসে যাচ্ছিলেন অভিযুক্ত। অভিযোগ, তাঁর মাথায় হেলমেট ছিল না। বেহালার বুড়ো শিবতলার এলাকায় ধরেন জেমস লং সরণির সার্জেন্ট দেবাশিস দাস। কেন তাঁর মাথায় হেলমেট নেই, সেই প্রশ্ন করতেই তেড়েফুঁড়ে ওঠেন ওই যুবক। ট্রাফিক পুলিশ আধিকারিককে গালাগালি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এরপর তাঁর নামে ট্রাফিক আইনে মামলা করতে উদ্যত হন ওই আধিকারিক। ট্রাফিক পুলিশ কর্তার অভিযোগ, তখনই তাঁকে রাস্তায় ফেলে গুলি করে খুনের হুমকি দেন ওই যুবক। এছাড়াও অনেক সময়ে রাতের শহরে দুষ্কৃতীরা গাড়িতে বিভিন্ন জিনিস পাচারও করে থাকে। সেসব ক্ষেত্রেই গাড়ি আটকালে প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের নিরাপত্তাও।
এই সব পরিবর্তিত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই পুলিশ কমিশনার এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে মত পুলিশের একাংশের। ট্র্যাফিক পুলিশের অন্য একটি অংশের মত, সার্ভিস পিস্তল বা রিভলভার কাছে থাকলে পুলিশের মনোবল আরও অনেকটা বাড়বে।