কলকাতা: ‘জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)’, বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে এমনই মন্তব্য করলেন তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। প্রসঙ্গত, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক মামলার শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চে। ইতিমধ্যেই এজলাসে বেশ কিছু কড়া মন্তব্য করেছেন তিনি, যা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রাজ্য সরকারকে। গতকালও একটি মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বলেছেন, ‘দিদি একা সামলাতে পারছেন না। এত দুর্বৃত্ত চারপাশে থাকলে সামলাবেন কী করে?’ অতীতেও বিচারপতির এমন বেশ কিছু মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। এবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিচারপতিকে বিঁধলেন তৃণমূল মুখপাত্র।
কুণাল ঘোষের বক্তব্য, বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় চলে যাওয়ার পর থেকে কিছুদিন ফাঁকা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। তিনি সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর একটি সরকার বিরোধী টুইট করতেন, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে একটি সরকার বিরোধী টুইট করতেন। তৃণমূল মুখপাত্রর বক্তব্য, ‘জগদীপ ধনখড় চলে যাওয়ার পর যে ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল, ইদানিং বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখে সেই ফাঁকা ভাবটা একটু একটু কেটে যাচ্ছে।’ কুণালের বক্তব্য, মামলার সঙ্গে বিচারপতির পর্যবেক্ষণের কোনও মিল থাকে না। বললেন, ‘মামলা একদিকে, ওনার পর্যবেক্ষণ আর একদিকে। আদালতের বিষয়, বেশি বলা যাবে না। তবে এটুকু বলতে পারি, জগদীপ ধনখড়ের শূন্যতা পূরণের চেষ্টা করছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। আমরা দেখছি, সমৃদ্ধ হচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিভিন্ন মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের এই বিরক্তি নতুন কিছু নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নাম না করে তৃণমূল শিবির থেকে বিভিন্ন মন্তব্য করা হয়েছিল। গত মাসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও কারও নাম না করে বলেছিলেন, ‘কেউ মিডিয়ার আলোয় আলোকিত হয়ে তার বাইরে বেরোতে পারছেন না।’
এদিকে কুণাল ঘোষের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে কড়া সমালোচনার সুরে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস কোনও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল নয়। ভারতের সংবিধানের মর্যাদা তাদের কাছে নেই। সাংবিধানিক প্রধানের পদমর্যাদা সম্পর্কে তাঁদের কোনও ধ্যানধারনা নেই। একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর মধ্যে কীভাবে রাজ্য সরকার চলে, তার কোনও দিশা তাদের কাছে নেই। একইসঙ্গে বিচার ব্যবস্থাকেও অস্বীকার করছে।’ তাঁর মতে, তৃণমূল কংগ্রেস একটি স্বৈরতান্ত্রিক স্বাধীন রাষ্ট্র চায় এবং সেই কারণেই এই ধরনের বিবৃতি।