কলকাতা: ২১ জুলাই তৃণমূল শহিদ দিবস পালন করে। সেই দিনেই এবার পথে নামছে বিজেপি। এই দিনটিতেই বিজেপি পালন করছে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’। রবিবারই শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমে এই ঘোষণা করেন। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, যে আন্দোলনকে সামনে রেখে ২১ জুলাই দিনটা পালিত হয়, তা মানুষের গণতন্ত্র রক্ষারই আন্দোলন ছিল। এখন বিজেপি এই দিনকে যদি গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসাবে দেখাতে চায়, বাংলার মানুষ ছাড়বে না। কুণালের কথায়, “এই ধরনের ডাক দিলে বিজেপির কফিনে শেষ পেরেকটা ২১ জুলাই বাংলার মানুষ পুঁতে দেবে।”
রবিবার রাজভবনের সামনে প্রতিবাদ সভা ছিল বিজেপির। সেখান থেকে এই জুলাইয়ে একাধিক কর্মসূচির ডাক দেয় তারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানান, “এই উপ নির্বাচনে যাঁরা ভোট দিতে পারেননি, যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে বিরোধী দলনেতা ও বিধায়করা পরিদর্শন করবেন। আগামী ২১ তারিখ গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালিত হবে। ২২ তারিখে সিইএসসি ঘেরাও করব। আর ১৭ তারিখ দলের কাছে প্রস্তাব দেব নবান্ন অভিযানের।”
কুণাল ঘোষ বলেন, “বিরোধী দলনেতা বলছেন বিজেপি ২১ জুলাই গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করবে। পাগল নাকি? ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই নো আইকার্ড নো ভোট, সচিত্র ভোটারকার্ডের দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আন্দোলন হয়েছিল। সিপিএম সরকার যেখানে লাঠি চালায়, পুলিশ গুলি চালায়, ১৩ জন শহিদ হন। মানুষ যে আজ সচিত্র পরিচয় পত্র নিয়ে ভোট দেন, সেই লড়াইটাই তো ছিল সেদিন। এটা তো গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হয়েছিল। বিজেপি ওই দিনটাকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস বলছে? এরা কি পাগল? বিজেপি দলটা এমনি তুলে দিচ্ছে। যদি এই ধরনের ডাক দেয় বিজেপির কফিনে শেষ পেরেকটা ২১ জুলাই বাংলার মানুষ পুঁতে দেবে। গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই হয়েছিল দিনটায়। কুৎসিত ভাবে সিপিএম গণহত্যা চালিয়েছিল। সেই শহিদ তর্পণের দিন ২১ জুলাই। এরা এই কুৎসা করলে তো নিজেদের কফিনে নিজেরাই শেষ পেরেকটা মারবে। বাকিরা বাংলার মানুষই মেরে দেবে।”
প্রসঙ্গত, ১৯৯৩ সালে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র ভোটার কার্ডের দাবি তোলেন তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দাবি নিয়ে তত্কালীন রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিবালয় মহাকরণ অভিযানের ডাক দেওয়া হয় কংগ্রেসের তরফে। অভিযোগ, সেই মিছিলেই আচমকা গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। গুলিতে নিহত হন ১৩ জন যুব কংগ্রেস কর্মী।