কলকাতা: বৃহস্পতিবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক কর্মসূচি। ইন্ডোরের সমাবেশে তৃণমূলের সব পঞ্চায়েত সদস্য, বিধায়ক, সাংসদদের যোগদান। সভার প্রধান বক্তা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তৃণমূলের এই মেগা বৈঠকের মুহূর্তেই বিস্ফোরক তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সারদা মামলায় গ্রেফতারির দশ বছর পূর্তিতে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করলেন কুণাল। তাঁর বক্তব্য, দশ বছর আগে বিনা দোষে চক্রান্তমূলকভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। তিনি বলেন, “অনেকেই ভেবেছিল ধ্বংস হয়ে যাব। তবে কলঙ্ক চাপানোর পর্ব আমি ভুলিনি।” তাঁর ইঙ্গিতমূলক বক্তব্য, “বিচার থেকে ষড়যন্ত্রীরা বাদ যাবে না। সেদিনের চোখের জল আর্তনাদ বৃথা যাবে না।”
প্রসঙ্গত, তৃণমূল সরকারের আমলেই সারদা কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল। আর দলের এই বিশেষ মুহূর্তে তৃণমূলের দিকেই কি আঙুল তুললেন কুণাল? এক্স হ্যান্ডেলে তাঁর পোস্ট ঘিরে এখন জল্পনা তুঙ্গে।
সালটা ২০২২২। TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউতে কুণাল যে কথা বলেছিলেন, তারই অনুরোণন যেন দেখা গেল এদিনের তাঁর এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে। সেদিন তিনি বলেছিলেন, “আমার জীবনে তো অনেক ঝড় জল গিয়েছে। আমার ক্ষোভ অভিমান ছিল। এটা তো লুকানোর কিছু নেই। আমি মনে করেছি, আমার সঙ্গে চক্রান্ত হয়েছে।” কথা প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও উত্থাপন করেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “একদিন এই ছেলেটিই এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। আমি জানি না একথা আমার প্রকাশ্যে বলা ঠিক হবে কিনা। ও আমার হাত ধরে বলেছিল, তুমি তো দিদির বাড়ির লোক, কুণাল দা তুমি কথা দাও, তুমি এমন কোনও কথা বলবে না, যাতে দিদি দুঃখ পায়। তুমি তো জানো চক্রান্ত হয়েছিল। অনেকেই বলেন, ইডি-সিবিআই-এর ভয়ে কুণাল চুপ। কিন্তু আমি বলি, কীসের ভয়। কুণাল ঘোষ জীবনে যা দুর্দশা দেখেছে, তা চুপ থাকি বা না থাকি, কিছু যায় আসে না।”
সেদিনের পর কুণাল আবার এক্স হ্যান্ডেলে তাঁর অভিমানের কথাই বললেন। তবে অনেকটাই রাখঢাখ রেখে। বর্তমানে নিয়োগ দুর্নীতিতে শাসকদলের হেভিওয়েট নেতাদের অনেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার র্যাডারে। সেই পরিস্থিতি কুণালের ‘বিচার থেকে ষড়যন্ত্রীরা বাদ যাবে না’ ধরনের মন্তব্য অনেকটাই ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।