Suvendu Adhikari: যারা এখানে থেকে পাকিস্তানের কথা বলে, লড়াই তাদের বিরুদ্ধে: শুভেন্দু
Suvendu Adhikari: বন্দে মাতরম বলে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই প্রস্তাব আনার জন্য স্পিকারকে ধন্যবাদ জানান। তারপরই ভারতীয় সেনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, "ভারত মাতা যখন ক্ষতবিক্ষত হয়েছে, তখন আমাদের বীর সেনারা ১০০ কিলোমিটার ঢুকে মাসুদ আজহার ছাড়া বাকি প্রায় সব জঙ্গিকে নির্বংশ করেছে।"

কলকাতা: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর প্রত্যাঘাতমূলক অভিযানের প্রেক্ষিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রস্তাব। মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশনে সেই প্রস্তাবের উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগাগোড়া আক্রমণাত্মক বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেনাকে ধন্যবাদ জানানোর প্রস্তাবে কেন অপারেশন সিঁদুর উল্লেখ নেই, সেকথা তুললেন। আবার এরাজ্যে কাদের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই, তাও স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। শুভেন্দুর বক্তব্যের মাঝেই তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন কক্ষেই তুমুল চিৎকার শুরু করেন।
সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এদিন অধিবেশনে প্রস্তাব আনেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রস্তাবে একাধিক তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়ক বক্তব্য রাখেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বন্দে মাতরম বলে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন। এই প্রস্তাব আনার জন্য স্পিকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি। তারপরই ভারতীয় সেনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “ভারত মাতা যখন ক্ষতবিক্ষত হয়েছে, তখন আমাদের বীর সেনারা ১০০ কিলোমিটার ঢুকে মাসুদ আজহার ছাড়া বাকি প্রায় সব জঙ্গিকে নির্বংশ করেছে। বিএসএফ-সহ প্যারা মিলিটারি, সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।”
এরপরই রাজ্যের শাসকদলের দুই বিধায়ককে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, “বারেবারে ব্রাত্য বসু শহিদ জওয়ান ঝন্টু শেখ এবং চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কর্নেল সোফিয়া কুরেশি বলেছেন। কে বারণ করেছে, বলুন না। এ পি জে আব্দুল কালামকে রাষ্ট্রপতি করেছিল এনডিএ সরকার। আপনাদের নেত্রী সমর্থন করেছিলেন। জাতের উপরে উঠে নাজমা হেপতুল্লা, আরিফ খানকে রাজ্যপাল করেছেন নরেন্দ্র মোদীজি।”
এদিন অধিবেশন কক্ষে হাতে তাগা পরেছেন বিজেপি বিধায়করা। তা তুলে দেখিয়ে শুভেন্দু বলেন, “পহেলগাঁওয়ে তাগা দেখে মারা হয়েছে।” তাঁর বক্তৃতার সময় তৃণমূলের তরফে প্রশ্ন ভেসে আসে, “আপনি শহিদ জওয়ান ঝন্টু আলি শেখের বাড়ি গিয়েছিলেন?” উত্তর দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “হ্যাঁ গিয়েছিলাম। স্থানীয় বিধায়ক হিসাবে আপনাদের মানিক ভট্টাচার্য জানেন।”
এরাজ্যে কাদের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই, সেকথাও তুলে ধরেন বিরোধী দলনেতা। বলেন, “যারা এখানে থেকে পাকিস্তানের কথা বলে, লড়াই তাদের বিরুদ্ধে। যারা এখানে জঙ্গি সংগঠন আনাসুরুল্লা বাংলাকে সমর্থন করে, লড়াইটা তাদের বিরুদ্ধে।” শুভেন্দু অধিকারীর বক্তৃতা চলাকালীন কয়েকজন তৃণমূল বিধায়ক চিৎকার করেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী সহ অরূপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমরা ওই বিধায়কদের থামতে বলেন। তা দেখে শুভেন্দু বলেন, “আপনারা বারণ করেন। আর গেটে গিয়ে ওরা বেলাইনে কথা বলেন।”
স্পিকারের সেনাকে ধন্যবাদ প্রস্তাবে কেন অপারেশন সিঁদুরের উল্লেখ নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে শুভেন্দু বলেন, “আপনার প্রস্তাবে সিঁদুর নামে আপত্তি কেন? কেন নাম নেই?” শিউলি সাহা বলেন, “সিঁদুর কি সবাই পরে?” তৃণমূল বিধায়ককে জবাব দিয়ে শুভেন্দু বলেন, “হ্যাঁ, সিঁদুর পরে না মাকুরা। ওরা চিনকে সমর্থন করে। যারা ধর্ম মানে না, তারা পরে না।”
একটি পোর্টালের ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যকে তুলে ধরেন শুভেন্দু। তখন স্পিকার তাঁকে বলেন, “বাইরে কে কী বলেছেন, তা যাবে না। ফিরহাদ তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য করেছেন। এগুলো বললে আপনার ফিরহাদকেও বলতে দিতে হবে।” বিরোধী দলনেতা বলেন, বলতে দিন।
শাসকদলের আরও দুই বিধায়ক উদয়ন গুহ এবং নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বক্তব্যও তুলে ধরেন শুভেন্দু। অধিবেশনের মাঝেই উদয়নের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হয় বিরোধী দলনেতার। উদয়নকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য দাবি জানান বিজেপি বিধায়করা। দুই পক্ষের চিৎকারে সরগরম হয়ে ওঠে অধিবেশন কক্ষ।
সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানানো প্রস্তাবে বিরোধী দলনেতার জন্য ১৮ মিনিট নির্ধারিত ছিল। পাকিস্তানকে আবর্জনা বলে আক্রমণ করে এই প্রস্তাবে অপারেশন সিঁদুর ও টার্গেট কিলিং কথা দুটো যুক্ত করার দাবি জানান বিরোধী দলনেতা। ভারতমাতা কী জয় এবং বন্দে মাতরম বলে বক্তৃতা শেষ করলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর বক্তব্য শেষে স্পিকার বললেন, “আমাদের উদ্দেশ্য সেনাবাহিনীকে শ্রদ্ধা জানানো। কী নাম গেল কিংবা গেল না, সেটা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।”





