কলকাতা : পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন ক্রমশ এগিয়ে আসছে। প্রতিটি নির্বাচনের আগেই বাংলার রাজনীতিতে দলবদলের ট্রেন্ড দেখা যায়। সূত্রের খবর, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগেও সেই ছবি দেখা যেতে পারে। বেশ কয়েকটি নাম নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। অন্তত তিনজন বিধায়ক ও তিনজন সাংসদের নাম রয়েছে সেই তালিকায়। প্রকাশ্যে কেউ এ বিষয়ে কোনও কথা না বললেও অর্জুন সিং-এর পর একাধিক নেতা সেই পথ ধরতে পারে বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের।
সূত্রের খবর, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ ও খগেন মুর্মু ছাড়তে পারেন বিজেপি। বর্তমানে তিনজনই লোকসভার সাংসদ। যদিও সবাই বিষয়টা অস্বীকার করেছেন। বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ আগেই জানিয়েছেন, যে দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে আসবেন, সে দিন তিনি বিজেপি ছাড়বেন। অর্থাৎ বিজেপি ছাড়ার কথা কোনও ভাবেইল মানছেন না তিনি। তবে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছেন, দলের সব কার্যকলাপে সন্তুষ্ট নন তিনি। আর সৌমিত্রের অসন্তোষ আগেও একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। কখনও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, তৃণমূলের থেকে শেখার আছে। আবার কখনও দাবি করেছেন, অপরিণত রাজ্য নেতৃত্বের জন্যই উপ নির্বাচনে খারাপ ফল হয়েছে বিজেপির। তাই মুখে না বললেও সৌমিত্রকে সন্দেহের তালিকায় ফেলছেন অনেকেই। অন্যদিকে, লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, তাঁর বিজেপি ছাড়ার কোনও কারণ নেই।
তিন মন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। একসময় তৃণমূল করা জন বার্লা, নীশিথ প্রামাণিক ও শান্তনু ঠাকুর বিজেপিতে যাওয়ার পর মন্ত্রী হয়েছেন। গেরুয়া শিবির নাকি তাঁদেরকেও খুব একটা ভরসা করছেন না। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই তিনজন ক্ষমতায় থাকতে পছন্দ করেন। ২৪-এর নির্বাচনে জিততে না পারলে ক্ষমতারও কোনও প্রশ্ন নেই। যতদিন মন্ত্রী, ততদিনই তাঁরা বিজেপিতে থাকবেন বলে মনে করছেন অনেকে।
তালিকায় নাম রয়েছে বিধায়কদেরও। শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, নাম আছে। এছাড়া চাকদার বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ ও হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকারের নামও দলবদলের তালিকায় থাকতে পারে বলে অনুমান। তাঁরা ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলেও জল্পনা। যদিও বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তরফে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তৃণমূল দরজা খুলে দিলে এ রাজ্যে বিজেপি দলটাই উঠে যাবে। শুধু তাই নয়, হলদিয়ায় দাঁড়িয়ে বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেছেন, তাঁকে দু বার ইডি তলব করেছে, তারপর দু জন সাংসদ তৃণমূলে এসেছেন। ভবিষ্যতে সিবিআই ডাকলে আবারও একই অবস্থা হবে বলে কার্যত হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।
এ দিকে, সদ্য তৃণমূলে আসা অর্জুন ওই জল্পনাকেই স্বীকৃতি দিচ্ছেন। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘বিজেপি ছেড়ে বহু সাংসদ যোগ দেবেন তৃণমূলে। অভিষেক খতিয়ে দেখছেন। অনেক বিজেপি সাংসদ ওনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ।’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ সঙ্কেত দিলেই বহু লোক আসবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।