Madan Mitra: ‘বাবা-মায়ের বিয়ে কবে হয়েছিল, ইন্টারভিউতে জিজ্ঞেস করত’ তৃণমূল অন্দরের খবর ফাঁস মদন মিত্রের
Madan Mitra: মদন মিত্র বললেন, " এরাই ঘরের আট জনকে আলাদা করে ইন্টারভিউ করে বাবার নাম কী, ঠাকুরদার নাম কী, বাবা কোন কলেজে পড়েছে, মা কোন কলেজে পড়েছে, বাবা-মার বিয়ে কবে হয়েছিল...এই সব করে একটা বিরাট কাগজ বানাত।"

কলকাতা: ‘প্যাকের কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লিন ইমেজে কালি লাগছে।’ নাম না করে ‘আইপ্যাক’কে নিশানা করে বোমা ফাটালেন বিধায়ক মদন মিত্র। কীভাবে একটা এজেন্সির হাতে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ হল, কীভাবে এজেন্সি মারফত মন্ত্রী-বিধায়কের নাম ঠিক হত, তা ফাঁস করলেন মদন মিত্র। ঠিক হত TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, “আমাদের তো তখন হাঁসপ্যাক কিংবা হ্যাকপ্যাক কিছুরই প্রয়োজন হয়নি। আমরা নিজেরাই করেছিলাম। কোনও ডিসপুট ছিল না। তৃণমূল ওয়াজ় অ্যা ভেরি ক্লিন পার্টি।”
মদন বললেন, ” একদিন হঠাৎ পার্টিতে কী হল আমি জানি না …. কাকে ধরে কীভাবে হল… একটা এজেন্সি এসে গেল। একটা ঘরে ৬-৮ জন বসে রয়েছে। এজেন্সি একদিন এসে বলল, আমরা প্রত্যেকের আলাদা করে ইন্টারভিউ নেব। আর রটিয়ে দেওয়া হল এরাই নাকি ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণে রয়েছে। এরা যে নাম দেবে, তাঁরাই নাকি মন্ত্রী, এমএলএ হবেন।” তাহলে কীভাবে হত তা নির্ধারণ? মদন মিত্র বললেন, ” এরাই ঘরের আট জনকে আলাদা করে ইন্টারভিউ করে বাবার নাম কী, ঠাকুরদার নাম কী, বাবা কোন কলেজে পড়েছে, মা কোন কলেজে পড়েছে, বাবা-মার বিয়ে কবে হয়েছিল…এই সব করে একটা বিরাট কাগজ বানাত। তারপর যাওয়ার সময়ে আবার আলাদা আলাদা করে সবাইকে বলে গেল, ‘আমি তোমার কেসটা দেখছি..’এটা বলে আমাদের নিজেদের মধ্যেই একটা বিভেদ তৈরি করে দিল।”
টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রি করা হত বলে অভিযোগ করেন তিনি। মদন বলেন, ” প্যাকের কারণেই এই টাকার প্রশ্নটা এল, পদ পেতে হলে যে টাকা দিতে হবে। তৃণমূলের অনেক পুরনো ছেলে, যারা মানে তৃণমূলের গোদা গোদা নেতা, তারাও অনেকে এরকম টাকা দিয়েছে। পদ পাওয়ার জন্য। লজ্জার বলছে না, কারণ তারা টাকা দিয়েছে শুনলে পাড়ায় আর বেরোতে পারবে না। এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও যোগাযোগ নেই। মমতাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখেই এই কাজ করা হয়েছে। আমি জানতাম, স্টুডিওতে আটটা বাজাল মানেই বলত প্যাক আপ… কিন্তু এই প্যাকআপ মানে যে মাল গোটাও, এটা আমরা বুঝতি পারিনি।”
আইপ্যাকের নাম না করে TV9 বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক দাবি করেছেন মদনমিত্র। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপির কাছে ‘ধাক্কা’ খাওয়ার পরেই প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে নবান্নে মমতার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন অভিষেক। তার পরে তৃণমূলের সঙ্গে চুক্তিও করে আইপ্যাক। এই এজেন্সির সঙ্গে দলের সব থেকে বেশি সমন্বয় সাধনের ভূমিকায় ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের দফতর। একুশের নির্বাচনের পর থেকে কিছু কিছু বিষয়ে অবনিবনা হতে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিধায়কদের উদ্দেশে তাঁকে বলতেও শোনা গিয়েছে, কোনও প্যাকফ্যাক তিনি মানেন না। এবার বিস্ফোরক মদন মিত্র।
এ বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওদের মাথাতে সাপে কামড়েছে আর তাগা বাধার জায়গা নেই। মদন মিত্র দলের ভিতরের অবস্থা নিয়ে বলেছেন, এনিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। এই প্যাক কেবল পদ বিক্রি করে তা নয়, খোঁজ নিয়ে দেখুন ‘২৪ সালে অভিযোগ ওঠে নেতাদের থেকে তোলাবাজি করেছিল। এরা তোলাবাজদের থেকেই তোলাবাজি করেছি। চোরের ওপর বাটপাড়ি যাকে বলে!”
