কলকাতা: কলকাতা পুরনিগমের অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি ও তৃণমূল কাউন্সিলরদের গন্ডগোল। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসুর বিরুদ্ধে। পুরনিগমের চেয়ারপার্সন মালা রায়ের সামনে এই ঘটনা ঘটলেও তিনি সাফ জানান, যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁরাই একমাত্র এর ভাল বিবরণ দিতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “ওদের পেটে গ্যাস হয়েছিল কি না ওরাই ভাল জানবেন।” শুধু তাই নয়, চেয়ারপার্সনের সাফাই, লোকসভা-বিধানসভাতেও এই ধরনের ঘটনা ঘটে। তাই পুরনিগমের এই মারামারি ‘ছোট’ ঘটনা। আর চেয়ারপার্সনের মন্তব্যের পর আরও দানা বেঁধেছে বিতর্ক। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, যে কোনও আইন সভাতে এই ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। অন্তত পক্ষে সাধারণ মানুষের কাছে এমন ঘটনা কি আদৌ ছোটখাটো? এই ধরনের ব্যবহার করার জন্যই ভোট দেওয়া হয় জনপ্রতিনিধিদের?
আজ গন্ডগোলের সূত্রপাত নিয়ে বারংবার বিজেপি কাউন্সিলররা অভিযোগ করেন, তাঁদের বক্তব্য পেশ করতে দেওয়া হয় না। আর কিছু বললেও কাজ হয় না। এ প্রসঙ্গে চেয়ারপার্সনের দাবি, “বিরোধীদের কোনও প্রশ্ন-প্রস্তাব থাকে না। তৃণমূলেরই যাঁরা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন তাঁরাই প্রশ্ন করেন। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরেই দেখছি বিরোধী দলের ভূমিকা খুবই নগণ্য। কোনও কিছু জানতে চান না। প্রশ্ন জমা দেন না, প্রস্তাবও জমা দেন না। আমার মনে হয়, তাঁদের ওয়ার্ডের কোনও অভাব অভিযোগ নেই। যদি থাকত তাহলেই উত্থাপন করার চেষ্টা করতেন। সকলকেই বলতে দেওয়া হয়।” এরপর অধিবেশন কক্ষের ঝামেলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি সাফ জানান, যাঁরা গন্ডগোল করেছেন সকালে তাঁরা কী খেয়ে বেরিয়েছিলেন তাঁরাই ভাল জানেন। মালা বলেন,”তাঁদের পেটে গ্যাস হয়েছিল কি না তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন।”
এখানেই শেষ নয়। এই গন্ডগোল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সাফাইয়ের সুরে মালা বলেন, “এই ঘটনা বহুবার হয়েছে। বিধানসভাতে হয়েছে। লোকসভাতেও হয়েছে। সুতরাং এটা যদি মহামারি হয় তাহলে লোকসভাতেও দীর্ঘদিন ধরে এই রোগ রয়েছে। সেখানে কলকাতা পৌরনিগমে ছোট-খাটো ঘটনা যদি ঘটে তাও দেখবেন সকলে।”
উল্লেখ্য, এ দিনের ঘটনার পর ইতিমধ্যেই বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ও তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসুকে শোকজ করেন মালা রায়। প্রসঙ্গ, আজ অধিবেশন চলাকালীন পুরনিগমের চেয়ারপার্সন মালা রায় বলেন, বিরোধীরা আজকাল প্রশ্ন করে না। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, বিরোধীদের এত সংখ্যা কমে গিয়েছে যে, তাদের কোনও প্রশ্ন থাকে না। এ কথার প্রতিবাদ করেন সজল ঘোষ, বিজয় ওঝারা। সজল বলেন, “বলেও কোনও লাভ হয় না। মেয়র-ডেপুটি মেয়র কোনও উত্তর দেন না।” অভিযোগ, সেই সময় সজল ঘোষ এবং বিজয় ওঝার দিকে তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু তেড়ে যান। তাঁর দাবি, মেয়রকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করা যায় না। শুরু হয় বাকযুদ্ধ। তারপর তা গড়ায় হাতাহাতিতে।