কলকাতা: রাজ্যজুড়ে লাইনে দাঁড়িয়ে এতদিন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে দেখা গিয়েছে বাংলার সাধারণ জনতাকে। এবার সেই তালিকায় যোগ দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালে নিজের পাড়ার শিবির থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড সংগ্রহ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্ড হাতে নিয়ে TV9 বাংলা-কে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, “আমি একজন সাধারণ মানুষ। তাই সাধারণ মানুষের সঙ্গেই কার্ড নিলাম।”
হরিশ মুখার্জি রোডের জয়হিন্দ ভবনে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির চলছে। এই ভবনটি মুখ্যমন্ত্রীর পাড়াতেই অবস্থিত। সোমবার মমতা বলেছিলেন, শিবিরে গিয়ে নিজের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিজে হাতে গ্রহণ করবেন তিনি। এদিন সকালে কথামতোই জয়হিন্দ ভবনে হাজির হন মমতা। সঙ্গে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও।
কিছুদিন আগে রাজ্যের ১০ কোটি মানুষকে বিনা ব্যয়ে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সরকার। তৃণমূলের দাবি, গোটা দেশে এই পরিষেবা নজির গড়েছে। বাংলা ছাড়া অন্য কোনও রাজ্যের সরকার এমন ‘ঐতিহাসিক’ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস দেখায়নি। বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, ভোটবাক্স ভরাতে তৃণমূল সরকারের এই ঘোষণা ‘গিমিক’ ছাড়া আর কিছুই নয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও জারি রয়েছে। মঙ্গলবারই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “স্বাস্থ্য সথীর সাড়ে তিন কোটি কার্ড দিয়েছেন। কতজন লোক পেয়েছেন, কেউ পায়নি। শুধুমাত্র ঘোষণা হয়, মানুষ কোনও লাভ পায় না।”
এসবের মধ্যেই এদিন কার্ড নিতে সটান হাজির হন মমতা। নির্দিষ্ট কক্ষে ঢুকে একেবারে আম-জনতার মতোই লাইনে দাঁড়িয়ে কার্ড গ্রহণ করেন তিনি। লাইনে তাঁর আগে দাঁড়িয়ে ছিলেন আরও কয়েকজন সাধারণ এলাকাবাসী। সেখানে দাঁড়িয়ে মাথা এগিয়ে আগের জনকে টুকটাক প্রশ্নও করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। এরপর নিজের পালা আসতেই মাস্ক খুলে ছবি তোলেন, আঙুলের ছাপ দেন বায়োমেট্রিক যন্ত্রে। উল্টোদিকের ডেস্ক থেকে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডটি। যে কার্ডকে একুশের বিধানসভা ভোটের আগে ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসাবে তুলে ধরছে তৃণমূল, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
তবে মমতার এভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়াকে ‘নাটক’ ছাড়া আর কিছুই বলতে রাজি নন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন বর্ধমানে এক দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার আগে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাইন দিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেওয়া নাটক । রাহুল গান্ধীও ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলেছিলেন নোটবন্দীর সময়ে।” কিন্তু এসবে ভোটব্যাঙ্ক ভরানো যাবে না বলেই কটাক্ষ দিলীপের।