কলকাতা: বারেবারে তাঁর পাশেই ছিলেন নেত্রী। এবারও কি অনুব্রতর পাশেই থাকতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘোর সঙ্কটেও কি তাঁর পক্ষেই সওয়াল করবেন? অনুব্রত নিয়ে কি আদৌ মুখ খুলবেন দলের শীর্ষ নেতারা? বুধবার শহরের দুই প্রান্তে প্রকাশ্য কর্মসূচি রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সব মিলিয়ে মমতা-অভিষেক কর্মসূচির মঞ্চ থেকেই অনুব্রত ইস্যুতে কিছু বলেন কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
প্রথম থেকেই যতবার কোনও না কোন কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডলের নাম জড়িয়েছে, (সে কোনও অপরাধ হোক কিংবা উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগ) ততবার দলনেত্রীকে তাঁর পাশে দাঁড়াতেই দেখা গিয়েছে। এমনটা করতে গিয়ে নেত্রীকে একটা সময়ে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘কেষ্টর মাথায় অক্সিজেন পৌঁছয় না’। এই নিয়ে অকপট ছিলেন কেষ্ট নিজেও। অবশ্য তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাঙ্গ বিদ্রূপ কম হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, ‘দিদি’র সবচেয়ে প্রিয় ভাইদের মধ্যে একজন অনুব্রত মণ্ডল। তৃণমূলের অন্দরেই শোনা যায় সে কথা।
এর আগেও একাধিকবার বিতর্কে জড়িয়েছেন কেষ্ট। কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু কেষ্টর প্রতি ‘দিদি’র আস্থা অটুট থেকে। প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়েই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছে, কেষ্টর মাথায় অক্সিজেন কম যায়। তাই কেষ্টর নিন্দা-মন্দ তিনি পছন্দ করেন না।
কিন্তু সম্প্রতি শাসকশিবির তাঁর নেতা কর্মীদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ওপর অত্যন্ত জোর দিচ্ছে। অন্তত পার্থ ইস্যুর পর থেকে তো বটেই। প্রকাশ্যে দাঁড়িয়েই দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যাচ্ছে, কোনও রকমে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না দল। পার্থকে ইতিমধ্যেই মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয়েছে। দলীয় অনুশাসনে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।
গরু পাচার কাণ্ডে বারবারই সিবিআই তলব করেছেন অনুব্রত মণ্ডলকে। ইতিমধ্যে তাঁর ছায়াসঙ্গীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। সিবিআই-এর দেওয়া প্রথম চার্জশিটে অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের চাপ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনুব্রতর ভালই চাপ রয়েছেন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এখন ‘দিদি’ তাঁর ভাইয়ের প্রতি কোন ‘স্ট্যান্ড’ নেন, আদৌ কোনও কিছু এখনও বলেন কিনা, সেটাই দেখার।
দলের মধ্যে দুর্নীতিকে বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় না দেওয়ার কথা বলা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও কী বলেন, সেটাই দেখার।