কলকাতা: বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলে, রাজ্য সরকার ‘খেলা’ আর ‘মেলা’তেই নাকি টাকা দেয়। সরকারি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার বেলায় কেন অভাবের যুক্তি আনা হয়, সে প্রশ্নও উঠেছে একাধিকবার। দুর্গা পুজোর কমিটিগুলিকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া নিয়েও প্রথম থেকেই বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। কেউ কেউ ভোটব্যাঙ্কের তত্ত্বও তুলে ধরেছেন। আর আজ পুজো কমিটিগুলির অনুদান বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা করার আগে মুখ্যমন্ত্রী বোঝান, কেন অনুদান দেওয়া হয় কমিটিগুলিকে। ঘোষণার আগে উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘যখন প্রয়োজন হবে সাহায্য করবেন তো?’ সমবেত স্বরে ইতিবাচক উত্তর শোনার পরই মমতার ঘোষণা, অনুদান এবার ৬০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭০ হাজার করা হল। প্রশ্ন উঠেছে, কোন সাহায্য চাইলেন মমতা?
সোমবার ইমাম-মোয়াজ্জেম ও পুরোহিতদের ভাতা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আর আজ বাড়ানো হল দুর্গা পুজোর অনুদান। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, লোকসভা নির্বাচনের আগে এইসব ঘোষণার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। তবে এ কথা মানতে নারাজ শাসক শিবির। রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও কলকাতার অন্যতম একটি বড় পুজোর উদ্যোক্তা। মমতার সাহায্য করার আর্জি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ফিরহাদ বলেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।” তাঁর মতে, পুজোয় অনুদানের অর্থা হল একটা বৃহত্তর বিনিয়োগ। দুর্গা পুজোর কয়েকটা দিনের সঙ্গে অনেক মানুষের রুজি রোজগার জড়িয়ে থাকে।
ফোরাম ফর দুর্গোৎসব কমিটি-র সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাজনৈতিক দিক থেকে কে কী বলছেন জানি না। তবে এত বছর ধরে পাশে থেকেছিলেন বলেই আজ ইউনেসকো থেকে স্বীকৃতি মিলেছে।’ তাঁর মতে, রাজনীতির ক্ষেত্রে অনেকে অনেক কিছু বলবেন, তার সবটা যে শুনে চলতে হবে, তার কোনও মানে নেই।
ঘোষণার আগে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে বলেন, কেন পুজোর উদ্যোক্তাদের অনুদান দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “টাকাটা এই জন্য দেওয়া হয়, কারণ তারা রাজ্যের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিগুলো প্রচার করে, টাকাটা এই জন্য দেওয়া হয়, যাতে ওই টাকা দিয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ায়, মানুষকে সজাগ করে। এমন নয় যে আমরা ক্লাবকে কিনছি টাকা দিয়ে।” সরকারে যে একদম টাকা নেই, সে কথাও এদিন উল্লেখ করেছেন মমতা।