কলকাতা: এনডিএ বিরোধী ইন্ডিয়া জোট (I.N.D.I.A) নিয়ে এখন মাতামাতি তুঙ্গে। আগামী ৩১ অগস্ট অর্থাৎ বুধবার মুম্বইয়ে বৈঠকে বসছে ‘ইন্ডিয়া’। এই জোটে বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল সকলেই এক মঞ্চে থাকবে। তবে তার আগে মঙ্গলবার এ রাজ্যে সর্বদল নিয়ে সিপিএম, কংগ্রেসের যে উন্নাসিকতা দেখা যাচ্ছে, তা আলাদা করে নজরে পড়ার মতোই। আজ নবান্ন সভাঘরে সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সেখানে সিপিএম-কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধিই থাকছে না। মূলত ‘বাংলার দিবস’ নিয়ে আজ সর্বদল ডেকেছেন মমতা। পশ্চিমবঙ্গের জন্য একটা আলাদা দিবস হচ্ছে। আর তা কবে হবে, নির্ধারণ করতেই এদিনের সর্বদল বৈঠকের ডাক।
বুধবার মহারাষ্ট্রে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে জোট ইন্ডিয়ার তৃতীয় বৈঠক হবে। জাতীয় রাজনীতি তাকিয়ে সেই বৈঠকের দিকে। সেখানে কংগ্রেস থাকবে, বামেরা থাকবে, তৃণমূল কংগ্রেস থাকবে। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালিত রাজ্যে আজ নবান্ন সভাঘরে যে সর্বদল ডাকা হয়, সেখানে থাকছে না বিরোধীরা।
২০ জুন ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ পালন করতে চায় বিজেপি। রাজ্যপালও এই দিনটি পালন করেছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার ২০ জুনকে মান্যতা দিতে নারাজ। কেন না বঙ্গীয় আইন পরিষদে (অবিভক্ত বাংলার প্রাদেশিক আইনসভা) এই দিনই অখণ্ড বাংলা ভাগের বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছিল। পরিষদে সিংহভাগ ভোট পড়েছিল বাংলাকে ভেঙে দেওয়ার পক্ষে। তৃণমূল মনে করে, এই দিনটি বঙ্গভঙ্গের যন্ত্রণার দ্যোতক। বরং বিকল্প একটি দিন ধার্য করতে আগ্রহী তারা। ইতিমধ্যেই বিধানসভার অধ্যক্ষ নিযুক্ত কমিটি পয়লা বৈশাখে মান্যতা দিয়েছে। যে কমিটির পরামর্শদাতা ছিলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সুগত বসু। তবে চূড়ান্ত দিন ধার্য করতে এদিন সর্বদল ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে শুধু সিপিএমই নয়, থাকছে না বামফ্রন্টের কোনও শরিক দলই।
সূত্রের খবর, সিপিএম, সিপিআই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের দিবস নিয়ে কেন এত উৎসাহ সরকারের? কর্মসংস্থান নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারত বলে মত বামেদের। একই সুর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির গলাতেও। তিনিও বলেছেন, সর্বদলে তাঁরা যাচ্ছেন না। আর বিজেপির এই বৈঠকে থাকার কোনও প্রশ্নই নেই। কারণ, তাদের কাছে ২০ জুনই ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’। ইতিমধ্যেই বাম, কংগ্রেসের সর্বদলে না যাওয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ইন্ডিয়া জোটে থেকে ‘দোস্তি’, অথচ রাজ্যে ‘কুস্তি’ লড়লে তা কি স্বচ্ছ বার্তা দেবে?