কলকাতা: শান্তিনিকেতনের ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না ফেরালে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর জন্য বেঁধে দিলেন সময়সীমাও। বৃহস্পতিবার কালীঘাটে নিজের বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মমতা বলেন, “আজ শান্তিনিকেতন যে হেরিটেজ সম্মান পেয়েছে, তা তো রবীন্দ্রনাথের জন্যই। উনি শান্তিনিকেতন বিশ্বভারতীর সৃষ্টিকর্তা। অথচ ওনার নামই সরিয়ে দিয়েছে। পুজো ছিল তাই চুপ করে হজম করেছি। কাল সকালের মধ্যে ফলক না সরালে, রবীন্দ্রনাথের নাম ফিরিয়ে না আনলে আমাদের ওখানকার লোক ১০টা থেকে রবীন্দ্রনাথের ছবি বুকে নিয়ে আন্দোলন করবে।”
গত ১৭ সেপ্টেম্বর শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষণা করে ইউনেস্কো। এই শান্তিনিকেতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত যে নাম, তা গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ। অথচ ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন জায়গায় যে শ্বেতফলক বসানো হয়, সেখানে আচার্য নরেন্দ্র মোদী ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম লেখা হয়েছে। অথচ রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনের স্বীকৃতি ফলক থেকে ব্রাত্য রবীন্দ্রনাথই। তাঁর নাম লেখা হয়নি সেই শ্বেত ফলকে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন প্রাক্তনীরা। শুধু প্রাক্তনীরাই নন, আপামর রবীন্দ্রপ্রেমীর কাছেই এমন ঘটনা সমালোচিত হয়। রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে তাঁর আশ্রমে এমনভাবে ফলক বসে গেল, হতবাক হয়ে যান বোলপুরের মানুষ। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্রভবন, কলাভবন, সঙ্গীতভবন, ছাতিমতলা প্রভৃতি জায়গায় শ্বেত পাথরের সেই ফলক বসানো হয়। নাম নেই রবীন্দ্রনাথেরই।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। বলেছেন, আগামিকাল শুক্রবার সকালের মধ্যে এই ফলক সরাতে হবে। না হলে রবীন্দ্রনাথের ছবি বুকে নিয়ে প্রতিবাদ হবে। রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার বলেন, “এটা খুবই অন্যায় হয়েছে। রবি ঠাকুরের জন্যই এই তকমা পেয়েছি। আর তাঁকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে ফলক থেকেই। ফলক না বদলালে নেত্রীর কথা মতোই শুক্রবার থেকে আমরা ধরনায় বসব।”
যদিও এ নিয়ে আগেই বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছিলেন, সূর্যকে আলাদা করে চিহ্নিত করার প্রয়োজন হয় না। রবীন্দ্রনাথ ও বিশ্বভারতীর সম্পর্কও সকলেই জানেন। অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।