Mamata Banerjee: ‘অনেকে ভেদাভেদ করছেন…’, কন্যাশ্রীর দ্বাদশ বর্ষ উদযাপনেও বাংলা ভাষার পক্ষে সওয়াল মুখ্যমন্ত্রীর
Mamata Banerjee: রাত পোহালেই স্বাধীনতা দিবস। সে নিয়ে কথা বলতে গিয়েই এই প্রসঙ্গে উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তিনি বলেন, " প্রয়োজনে ইংরাজি ভাষা দরকার, কিন্তু মাতৃভাষা বাংলাকে কখনও ভুলবেন না।"

কলকাতা: কন্যাশ্রী দ্বাদশ বর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়েও বাংলা ভাষার পক্ষে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলিপুর ধনধান্য স্টেডিয়ামে দর্শকের আসনে বসে থাকা ছাত্রীদের উদ্দেশে বললেন, সব ভাষাই শিখতে হবে। তা জীবন এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। কিন্তু বাংলা ভাষা, নিজের মাতৃভাষাকে ভুললে চলবে না।
রাত পোহালেই স্বাধীনতা দিবস। সে নিয়ে কথা বলতে গিয়েই এই প্রসঙ্গ উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। তিনি বলেন, “প্রয়োজনে ইংরাজি ভাষা দরকার, কিন্তু মাতৃভাষা বাংলাকে কখনও ভুলবেন না। অনেকে ভেদাভেদ করে কিন্তু ভেবে দেখেছেন স্বাধীনতা আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ-নজরুল যখন গান গেয়েছিলেন, কোনও ভেদাভেদ ছিল না।দেশ যেদিন স্বাধীন হচ্ছে, সেদিন গান্ধীজীও বাংলায় ছিলেন, বেলাঘাটায় গান্ধী আশ্রমে।” আর তারপরই বলেন, “সেদিন যাঁরা এক কাপড়ে সব ফেলে চলে এসেছিলেন, তাঁরা তো দেশের নাগরিক হিসাবে গণ্য হয়েছেন। কিন্তু যাঁরা দেশের নাগরিক নন, বিদেশি, তাঁদের বিরুদ্ধে ভারত সরকার ব্যবস্থা নিক, আমার বলার নেই। কিন্তু অযথা হেনস্থা করা ঠিক নয়।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী ‘৭১ এর পরে ভারতে আসা বাংলাদেশিদের নিশানা করলেন? বাংলার SIR আবহে এহেন মন্তব্য যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ, বলছেন বিশেষজ্ঞরাই।
উদাহরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি গত পরশু দিনই দেখলাম, নয়ডাতে এক ব্যক্তি তাঁর সন্তানকে নিয়ে একটি হোটেলে উঠতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি বাংলায় কথা বলেছিলেন বলে হোটেলের রুম ভাড়া দেওয়া হয়নি।” সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ‘বাংলা ভাষা’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভিন রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থারও শিকার হতে হচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ উঠছে। তা নিয়ে সংসদেও ঝড় তুলেছে তৃণমূল। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ‘কন্যাশ্রী’দের আগামী দিনের পথ মসৃণের বার্তা দিতে গিয়ে বাংলা ভাষার পক্ষেও মুখ্যমন্ত্রীর সওয়াল যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
কন্যাশ্রী প্রকল্পে বাংলার অবস্থান স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৯৩ লক্ষেরও বেশি কন্যাশ্রী এখন বাংলায়। কিন্তু সেটা এক কোটি করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই প্রকল্পের ১৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছি ইতিমধ্যেই। আগে কন্যাশ্রী ছিল স্কুলে। এখন কলেজে কন্যাশ্রী ২, বিশ্ববিদ্যালয়ে কন্যাশ্রী ৩ পান।”
পরিসংখ্যান দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “২০১১-১২ সালে মেয়েদের ড্রপ আউট শতাংশ ছিল প্রায় পৌনে পাঁচ পার্সেন্ট। আজকে হয়েছে শূন্য। সেকেন্ডারিতে ২০১১-১২ সালে ড্রপ আউট ছিল ১৬.৩২, এখন ২.৯ শতাংশ। উচ্চ মাধ্যমিকে ২০১১-১২ সালে ১৫.৪১ শতাংশ ছিল, এখন উচ্চ মাধ্যমিকে ড্রপ আউট ৩.১৭ শতাংশ।”

