কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল হিসেবে বুধবার শপথ নিলেন সি ভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। আর তাঁর শপথগ্রহণ পর্ব ঘিরে বুধবার সকাল থেকে সব নজর ছিল রাজভবনের দিকে। রাজ্যের বিভিন্ন দলের রাজনীতিকরা, সমাজের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন। সেই আমন্ত্রিতের তালিকায় ছিলেন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা তথা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুও। তাঁর বসার ব্যবস্থা ছিল দ্বিতীয় সারিতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বিমান বাবুকে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই এগিয়ে যান তাঁর দিকে। বর্ষীয়ান বাম নেতার সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন। তাঁকে এগিয়ে নিয়ে আসেন সামনের সারিতে। বঙ্গ রাজনীতিতে সৌজন্যের এক অনন্য চিত্র ধরা পড়ল এদিন রাজভবনের ভিতরে।
দ্বিতীয় সারিতে ছিল বিমান বসুর বসার জায়গা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছে এগিয়ে গিয়ে কথা বলেন। এরপর চেয়ার সরিয়ে বিমান বাবুকে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসেন। এক দশকেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত, বাংলার মসনদ থেকে ছিটকে গিয়েছে বামেরা। গত বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন হাতে পায়নি বামেরা। ভোটের আগের ‘আসন বোঝাপড়ার’ জোটের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে মুখরক্ষা করছে আইএসএফ। বাম শূন্য বিধানসভা হয়ে যাওয়ার পরও, রাজনৈতিক সৌজন্যে যে কোনও খামতি নেই, বুধবার রাজভবনের চিত্রটা যেন সেটাই বার বার বুঝিয়ে দিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে আসতেই জোড় হাতে তাঁর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন বিমান বসুও।
রাজভবনে শুভেন্দুর অনুপস্থিতি নিয়ে খোঁচা দিতে গিয়ে তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারও মমতা-বিমান সৌজন্য বিনিময়ের কথা তুলে ধরেন। টিভি নাইন বাংলাকে জয়প্রকাশ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখুন আজ। আমরা দেখলাম, তিনি এগিয়ে গেলেন। বিমানবাবু বসে ছিলেন দ্বিতীয় সারিতে। পশ্চিমবঙ্গের গত ৫০ বছরের রাজনীতিতে বিমানবাবু বেশি উল্লেখযোগ্য না শুভেন্দু অধিকারী? তিনি দ্বিতীয় সারিতে বসেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছে গিয়ে সৌজন্য বিনিময় করলেন। আর শুভেন্দুবাবু টুইট করে বললেন, আমি যাব না।”
প্রসঙ্গত, এর আগেও একাধিকবার বিধানসভা বাম শূন্য হয়ে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছিল শাসক দলের মুখে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও এই নিয়ে অতীতে মুখ খুলেছিলেন। সম্প্রতি আবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও বাম-কংগ্রেস শূন্য বিধানসভা নিয়ে আক্ষেপ করেছিলেন।