কলকাতা: মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। বিশেষত রমজান মাসে ফলের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার তাই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একদিকে বাজারদরের ওপর নজরদারি চালানোর কথা বলেছেন তিনি। পাশাপাশি, সাধারণের কথা মাথায় রেখে সুফল বাংলা-র আউটলেটগুলিতে আরও সস্তায় প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করার কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আলু, পেঁয়াজের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম কমানোর পাশাপাশি, রমজানের কথা মাথায় রেখে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
সকাল ৮ টা থেকে ১১ টা ও বিকেলে ৩ টে থেকে সন্ধ্যা ৭ টা প্রতিটি বাজারে সুফল বাংলার গাড়ি থাকবে। সেখান থেকেই কম দামে কেনা যাবে জিনিসপত্র।
আলু- মমতা জানান, মিড ডে মিলের জন্য যে আলু লাগে, তা কৃষকদের থেকে কিনে নেবে সরকার। আর সুফল বাংলায় ২২ টাকা কেজি দরে যে আলু বিক্রি করা হচ্ছে, তা কমিয়ে ২০ টাকা করা হবে বলে প্রথমে জানান তিনি। পরে বলেন, ‘আরও ২ টাকা কমিয়ে দিন, ১৮ টাকা করে দিন।’
কলা- কাঁচা কলা, পাকা কলা সবই সরকার যাতে বেশি করে কিনে নেয়, সেই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কলা সবার লাগে, ছোটদের লাগে, হিন্দুদের লাগে, মুসলিমদের লাগে, শিখদেরও লাগে।’ মমতা জানান, বাজারে সিঙ্গাপুরি কলা ৬০-৭০ টাকা প্রতি ডজন দরে বিক্রি হচ্ছে, সেটা সুফল বাংলা থেকে ২৫ টাকা প্রতি ডজন দরে দেওয়া হবে।
পাকা পেঁপে- বর্তমানে ৪৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় সুফল বাংলায়। সেটা ৪৫ টাকা করে দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তরমুজ- সুন্দরবনের কৃষকদের থেকে তরমুজ কিনে নেওয়া হবে বলে জানান মমতা। বর্তমানে ২৯ টাকা করে এই ফল বিক্রি হচ্ছে, সেটাই কমিয়ে ২৫ টাকা করে দেওয়ার কথা বলেন মমতা।
পেঁয়াজ- ২২ টাকা কেজি দরে সুফল বাংলায় বিক্রি হয় পেঁয়াজ, আর সাধারণ বাজারে ২৫ টাকায়। সেটা কমিয়ে ২০ টাকা করে দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, পেঁয়াজ দু রকমের হয়- নাসিকের ও সুখসাগর। সুখসাগর পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে বাংলায়। সুখসাগর পেঁয়াজ ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা বলেছেন তিনি।
পাশাপাশি, আদা-রোশন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, কাঁচা ছোলা সুফল বাংলায় অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি করার কথা বলেন মমতা। যাতে কেউ একসঙ্গে অনেক জিনিস কিনে নিয়ে না চলে যেতে পারেন, তার জন্য পরিমান বেঁধে দেওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সুফল বাংলায় খেঁজুর রাখা বাধ্যতামূলক। এদিনের বৈঠক শেষে এ কথা জানিয়ে দিলেন মমতা। কারণ রমজান মাসে ইসলাম রীতি অনুযায়ী, রোজা ভাঙতে একটা খেঁজুর খেতেই হয়। মমতা উল্লেখ করেন, এ রাজ্যে ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু রয়েছেন। তাঁদের জন্য রমজান মাসে খেঁজুর অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি, আঙুর, কলা রাখার কথাও বলেন তিনি। সাধারণত ফল খেয়েই রোজা ভাঙেন সংখ্যালঘুরা। তাই তরমুজ, পাকা পেঁপের মতো ফলের দাম কমানোর ক্ষেত্রেও জোর দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee on medicines: ‘দু নম্বরি ওষুধে ছেয়ে গিয়েছে বাজার’, বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মমতা