মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, চাকরি হারাদের অনেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগা করার চেষ্টা করছে। তাঁদের জন্য সরকার আইনত যতদূর যাওয়ার যাবে, এমনটাই আশ্বাস দিলেন মমতা। সোমবার নবান্ন থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
- ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে। আমার কাছে প্রচুর ফোন আসছে, অনেকে আমার কাছে আসছে। প্রত্যেকের পরিবারে যদি ৬ জন করে থাকে, তাহলে রাতারাতি প্রায় ২ লক্ষ মানুষ বেকার হয়ে গিয়েছে। এটা বিচারাধীন বিষয়। তাই কিছু বলব না : মুখ্যমন্ত্রী
- আমি সরকারের অবস্থানটা বলব। এমনিতেই অনেক নিয়োগ বাকি আছে। এই সব ঘটনার জন্য সেগুলো আরও দেরি হচ্ছে। আমি কোর্টকে দায়ী করছি না। কোর্টের নির্দেশকে সম্মান জানাচ্ছি : মুখ্যমন্ত্রী
- যাঁরা ডিএ-র জন্য প্রতিদিন চিৎকার করছে, তাঁদের জন্যই ৩৬ হাজারের চাকরি চলে গেল, তাঁদের কথা কেউ ভাবছে না। কী কারণে চাকরি গেল, সেগুলো নিয়ে আমাদের আইনজীবীরা কথা বলবে: মুখ্যমন্ত্রী
- কেউ দাবি করেছিল, ওরা নাকি ট্রেনিং নেয়নি। কিন্তু সেটা ঠিক নয়। একটা অর্ডার ছিল, চাকরিতে ঢোকার তিন বছরের মধ্যে ট্রেনিং নিতে হবে, সেটা প্রত্যেকের নেওয়া আছে: মুখ্যমন্ত্রী।
- চাকরিহারাদের আবেদন করব, ডিপ্রেশনে ভুগবেন না, মানসিক ভারসাম্য হারাবেন না, মন খারাপ করবেন না। আমাদের সরকার মানবিক। আইনি পথে যতদূর লড়তে হয় লড়ব: মুখ্যমন্ত্রী।
- আমার কাছে অনেক খবর আছে। অনেকে ডিপ্রেশনে ভুগছেন। কেউ যদি কিছু একটা ঘটিয়ে ফেলে তখন তার দায় কে নেবে! মানুষের জীবনের দাম অনেক: মুখ্যমন্ত্রী।
- সত্যি অন্যায় করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। দুর্নীতিকে কখনও প্রশ্রয় দেব না: মুখ্যমন্ত্রী।
- একটা রাজ্য দেখাও যারা পরপর চারবার ১০০ দিনের কাজে প্রথম হয়েছে। তারপরও এত কথা? বাংলা এখন মডেল হয়ে গিয়েছে। অন্য রাজ্য থেকে বাংলার স্কিম সম্পর্কে জানতে আসছে। আমরা তাঁদের স্বাগত জানাই: মুখ্যমন্ত্রী।
- আমার ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে দিল্লিতে। সেটা এনে দিক। তিন শতাংশ ডিএ দিয়েছি, আরও তিন শতাংশ করে দেব: মুখ্যমন্ত্রী।
- আগে তো শিক্ষকরা ১ তারিখে মাইনেও পেত না। এখন ঠিক সময়ে বেতন পায়, পেনশন পায়। সব স্কিমের টাকা পায় সময় মতো: মুখ্যমন্ত্রী।
- আপনি সরকারি চাকরি করেন। সব সুবিধা পান। অফিসের সময়ে আপনারা রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন। মানুষ তো পরিষেবা পাচ্ছে না। বিক্ষোভ করতে নিষেধ করছে না, অফিসের সময় বাদ দিয়ে করুন।
- হরিশ মুখার্জি রোড তো ওয়ান ওয়ে। আমিও একটা নির্দিষ্ট সময় রাস্তাটা ব্যবহার করতে পারি। আমি একদিন হরিশ মুখার্জি রোড থেকে অফিসের একজনকে ডেকে জানতে পারলাম, ৪ ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ। কেউ বেরতে পারছে না: মুখ্যমন্ত্রী।
- আলিমুদ্দিন থেকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। সেই ট্র্যাডিশন আজও চলছে। কারণ আমি কাউকে বরখাস্ত করিনি: মুখ্যমন্ত্রী।
- ডিএ অধিকার নয়, অপশন। তাও আমরা দিয়েছি। ডিএ ম্যান্ডেটরি নয়। এটা অপশন। টাকা থাকলে কাউকে ভালবেসে পুরস্কার দিলাম। কেন্দ্রের চাকরি খুঁজে নিন, বেশি বেতন পাবেন, বেশি ডিএ পাবেন: মুখ্যমন্ত্রী।
- আমি জীবনে কারও কাছ থেকে কেড়ে নিতে শিখিনি। শিখেছি, পারলে কাউকে কিছু দিতে হয়। যারা ছাত্র-যুবদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, তাদের কাছ থেকে সুবিচার আশা করি না: মুখ্যমন্ত্রী।
- শিশুদের অনেক সময় কোলে করে নিয়ে যায়। এগুলো সাধারণ হয় না। এখন অ্যাম্বুল্যান্স প্রচুর হয়েছে। পরিবারের ইচ্ছে অনুযায়ী এগুলো হয়। কালিয়াগঞ্জের ঘটনা সম্পর্কে বললেন মমতা।
- আমাকে হয়ত রাতে বলতে দেবে। সবার শেষে বলতে দেবে। দিল্লিতে নীতি আয়োগ বৈঠক সম্পর্কে বললেন মমতা।
- যেখানে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী, সেখানে বিজেপি লড়তে পারবে না। কর্নাটকেও মানুষের রায় বিজেপির বিপক্ষে। অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, গণতন্ত্র নেই। এই পরিস্থিতিতে যে শক্তিশালী, তাদেরই একজোট হয়ে লড়াই করা উচিত: মমতা।