কলকাতা: সরকারি হাসপাতাল মানেই রোগীদের ঠেলাঠেলি ভিড়ের চেনা ছবি। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। এরই মধ্য়ে প্রশ্ন উঠল রাতে সিনিয়র চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিয়ে। রবিবার রাতে যে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল রাজ্যের একমাত্র সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এসএসকেএমে, তারপর খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেছেন, আমি মনে করি রাতেও সিনিয়র ডাক্তারদের থাকা উচিত। এরপরই সেই প্রশ্ন আরও জোরাল হয়েছে। রাত বাড়লে সিনিয়রদের দেখা পাওয়া যায় না কেন? কেন দুজন জুনিয়র ডাক্তারকে রোগীর পরিবারের হাতে হেনস্থা হতে হল? এটাই কি নিয়ম নাকি নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অনুপস্থিত চিকিৎসকেরা?
সূত্রের খবর, যে সব হাসপাতালগুলি একই সঙ্গে মেডিক্যাল কলেজও বটে, সেখানে সিনিয়র চিকিৎসকেরা সাধারণত দিনের বেলাতেই থাকেন। যেহেতু তাঁরা অধ্য়াপনাও করেন, তাই তাঁরা সাধারণত সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত হাসপাতালে থাকেন। এসএসকেএমের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিল বলে মনে করছে চিকিৎসক মহল। এর কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই, তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই নিয়মই মেনে চলে।
উল্লেখ্য, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁর স্ত্রীও দাবি করেছিলেন, রাতে চিকিৎসক পাওয়া যায়নি। এরপরও পরিস্থিতি পাল্টাল না কেন, সেই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।
এবার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলার পর কি পরিস্থিতি পাল্টাবে? এক সিনিয় চিকিৎসকের কথায়, এত চিকিৎসকই নেই, যাতে দিনে-রাতে সমানভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়। তাঁর দাবি, চিকিৎসকের যা অবস্থা, তাতে রাত সামলাতে গিয়ে দিনের অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে। সকালে ওপিডি-তে বিপুল সংখ্যক রোগী, ইনডোরেও একই অবস্থা থাকে। সে সব সামলে সিনিয়র চিকিৎসকদের পড়াতেও হয়। তারপর রাতে তাঁদের থাকা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তাঁর।
আর এক চিকিৎসক প্রশ্ন তুলেছেন, হাসপাতালে চিকিৎসকদের উপস্থিতি নিয়ে। যাঁর যখন ডিউটি থাকে, তিনি তখন হাসপাতালে কি আদৌ থাকেন? কোথায় থাকেন সেই সময়? সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, মফস্বলের অবস্থা তো দূর, কলকাতার অনেক হাসপাতালেও চিকিৎসকেরা ঠিক মতো আসেন না।
এছাড়াও হাসপাতালেক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও সেই রাতে পুলিশ কোথায় ছিল, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এরপরই লালবাজারে পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। শহরের সরকারি হাসপাতালের পুলিশি ব্যবস্থা কতটা জোরদার , ডিউটি কী ভাবে করা হয় সেগুলি অফিসারদের সঙ্গে বসে পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।