কলকাতা: রাজ্য বিধানসভায় এদিন সার নিয়ে বঞ্চনার ইস্যুতে সরব শাসক পক্ষ। এখন আলু চাষের জন্য সারের দরকার। রাজ্যের দাবি, বর্তমানে রাজ্যে প্রয়োজন ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন সার। কিন্তু আসছে মাত্র ৭৭ হাজার মেট্রিক টন। কেন্দ্রের থেকে পর্যাপ্ত সার আসছে না বলে অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর এমন অবস্থায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই সার ইস্যুতে কি বিরোধীদের কোর্টেই বল ঠেলে রাখলেন মমতা? বললেন, “সার দিচ্ছে না কেন্দ্র, চাষিদের কষ্ট হচ্ছে।” আর এর জন্য বিরোধী দলকেও উদ্যোগ নিতে বলেন তিনি। শুধু সারই নয়, এর পাশাপাশি একশো দিনের কাজের টাকাও যাতে রাজ্য পায়, সেই বিষয়টি দেখার জন্য বিরোধীদের উদ্যোগী হতে অনুরোধ মুখ্যমন্ত্রীর। সার নিয়ে যে ইতিমধ্যেই তিন বার চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেই কথাও বলেন তিনি।
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজনীতির স্বার্থে বাংলাকে বদনাম করা যাবে না। আমরাও রাজনীতি করেছি। কিন্তু রাজনীতির জন্য উন্নয়নকে কখনও স্তব্ধ করে দিইনি। এটা কী হচ্ছে? সারের দাম পাচ্ছি না, ১০০ দিনের টাকা পাচ্ছি না।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে যে তিনি এই সারের ইস্যুতে চিঠি লিখেছেন, সেই কথাও এদিন বলেন তিনি। প্রসঙ্গত, এর আগে অতীতে বিভিন্ন সময়ে বঙ্গ বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের গলায় শোনা গিয়েছে, বিভিন্ন বেনিয়মের অভিযোগের কারণে তাঁরা কেন্দ্রকে বলেছেন টাকা আটকে দেওয়ার জন্য। এবার মুখ্যমন্ত্রীই বিরোধীদের অনুরোধ করলেন, যাতে সার এবং একশো দিনের কাজের টাকার বিষয়টি নিয়ে বিজেপি শিবিরও উদ্যোগী হয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে, বিজেপি শিবিরের উপর সারের বঞ্চনার ইস্যুতে বিরোধীদের পাল্টা চাপে রাখার কৌশল দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীর কথায়। অন্তত এমনই মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন। বিজেপি শিবির এমন অবস্থায় একশো দিনের কাজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইস্যুতে শাসক শিবিরের উপর চাপ তৈরি করে যাচ্ছে। অতীতে একশো দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার কাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বেনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সারের কালোবাজারির অভিযোগ নিয়েও সরব হয়েছে বিজেপি। রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, এমন অবস্থায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পর্যাপ্ত সারের ইস্যুতে বিরোধী দলের কোর্টেও বল কিছুটা ঠেলে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী।