কলকাতা: দুপুর তখন প্রায় ১২ টা ৫ মিনিট। নবান্নে ঢুকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ১৪ তলায় তাঁর ঘর। কিন্তু লিফ্ট উঠে ১৪ তলায় না গিয়ে হঠাৎ পঞ্চম তলে নেমে পড়েন তিনি। নবান্নের পাঁচ তলায় সোজা ঢুকে যান ৪০৩ নম্বর রুমে ও ৪০৪ নম্বর রুমে। এই ঘরগুলি রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের (Department of Home and Hill Affairs) অফিস। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীও তিনি। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী হঠাৎ পরিদর্শনে চলে যাওয়ায় প্রথমে কিছুটা হকচকিয়ে যান উপস্থিত কর্মী ও অফিসাররা। কিন্তু কেন এই সারপ্রাইজ় ভিজ়িট মুখ্যমন্ত্রীর? নবান্ন সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বরাষ্ট্র দফতরের অফিসে গিয়ে জানতে চান ১০ তারিখ কারা কারা কাজে আসেননি। শুধু তাই নয়, এদিন যখন মুখ্যমন্ত্রী নবান্নের পাঁচ তলায় যান, তখনও বেশ কিছু টেবিল খালি ছিল।
উপস্থিত বাকিদের কাছে মমতা জানতে চান, তাঁরা কেন আজ আসেননি। যাঁরা সেই সময় অফিসে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা জানালেন, অসুস্থ থাকার কারণে ৬ জন আসতে পারেননি। বাকি দুই-একজন ছুটিতে রয়েছেন। এরপর কোঅর্ডিনেশনের কারা কারা আছেন, তাঁদেরও খোঁজ নেন মমতা। প্রায় ১০-১২ মিনিট সেখানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বকেয়া মহার্ঘভাতার দাবিতে গত ১০ মার্চ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা। সেই ধর্মঘটের দিন কড়া অবস্থানের পথে হেঁটেছিল রাজ্য সরকারও। নবান্ন থেকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, শারীরিক অসুস্থতা, পরিবারে কোনও শোকের পরিস্থিতি এবং আরও কিছু ব্যতিক্রমী কারণ ছাড়া ১০ মার্চ প্রত্যেক সরকারি কর্মচারীকে কাজে আসতে হবে। এমনকী কেউ হাফ ডে ছুটিও নিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর যাঁরা তা মানবেন না, তাঁদের শোকজ় নোটিস ধরানো হবে। উত্তর সন্তোষজনক না হলে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে বুধবার হঠাৎ নবান্নের পাঁচ তলায় স্বরাষ্ট্র দফতরের অফিসে হাজির স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
প্রসঙ্গত, গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, আপাতত কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়া সম্ভব নয়। বলেছিলেন, “কাজ করবেন রাজ্য সরকারে, আর কেন্দ্রের হারে টাকা দিতে হবে, সেটা চলতে পারে না। রাজ্য রাজ্যের পে কমিশন অনুযায়ী চলে। আমরা ষষ্ঠ পে কমিশন অনুযায়ী টাকা দিয়েছি।” রাজ্যের তরফে মুখ্যমন্ত্রী এর কারণও ব্যাখ্যা করে দিয়েছিলেন। মমতার বক্তব্য, রাজ্য সরকারের পরিকাঠামো ও কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকাঠামো একরকম নয়।