কলকাতা: লোকসভা নির্বাচন, উপনির্বাচনের পর তৃণমূলের মেগা শো। একুশে জুলাই। ‘ল্য়ান্ডস্লাইড ভিক্ট্রি’র পর বাংলার মানুষকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এটাই সবচেয়ে বড় মঞ্চ। কৃতজ্ঞতা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী, সঙ্গে আবার ক্ষমাও চাইলেন। এজেন্সি, গ্রেফতারিকে পরোয়া না করেই এই জয় তৃণমূলের। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে দলের নেতা কর্মী-মন্ত্রীদের মধ্যে যাতে কোনও দম্ভ তৈরি না হয়, তারও পাঠ অক্ষরে অক্ষরে পড়ালেন মমতা। বললেন, “যেখানে যেখানে জিতেছেন, ভাল করে মানুষকে গিয়ে ধন্যবাদ জানাবেন। পারবেন না, দলকে জানাবেন।” গত লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের মাটিতে দাঁত ফোটাতে গিয়ে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। আর তার কাটাছেড়া বিশ্লেষণ করতে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গে আমাদের ফল খুব ভাল হয়নি।”
তবে সঙ্গে এও বলেন, “আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের মানুষকে ধন্যবাদ।” তাঁর কথায় উঠে আসে মালদহ প্রসঙ্গ। মমতা বলেন, “মালদহে লোকসভা নির্বাচনে আমরা জিতিনি, আমি জানি না কেন আপনারা আমাদের ভুল বুঝলেন, হয়তো আমাদেরই দুর্ভাগ্য। একটা সিট বিজেপিকে, একটা কংগ্রেসকে। ওরা কোনওদিন কিছু করেছে আপনাদের জন্য। তাও ভুল বুঝিনি আমি। আমি বিশ্বাস করি, ছাব্বিশের মালদহের আম আমসত্ত্ব আমরা পাবই।”
২০০৯ সালে মালদহ লোকসভা কেন্দ্র ভেঙে দুটি লোকসভা কেন্দ্র হয়। মালদহ উত্তর ও মালদহ দক্ষিণ। গনি খানের ‘রাজত্বে’ ২০১৯ সালে প্রথম পদ্ম ফোটাতে সক্ষম হয় গেরুয়া শিবির। গনি পরিবারের মৌসম বেনজির নূর কংগ্রেসের টিকিটে এই কেন্দ্র থেকে পরপর ২ বার জেতেন। এরপর তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তারপর থেকেই অল্প বিস্তর ঘাসফুল ফুটতে দেখা যায় মালদা উত্তরে। তবে ভিত মজবুত করার চেষ্টা করে তৃণমূল। কিন্তু ছব্বিশে তাঁর প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। মালদহ উত্তরে খগেন মুর্মুু প্রায় ৩৭ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন। মালদহ দক্ষিণে আরও শক্ত হয়েছে হাত।
লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গে বিশেষ নজর দিয়েছে তৃণমূল। মালদহে গিয়ে সভা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তবুও হাল ফেরাতে পারেনি ঘাসফুল! কিন্তু তাতে হাল না ছেড়ে সংগঠন আরও মজবুত করার ওপর নজর দিয়েছেন নেত্রী। সামনেই ছাব্বিশের নির্বাচন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, সেই নির্বাচনে, মালদহের ‘আম’ ও ‘আমসত্ত্ব’ সবই পাবেন তিনি।