কলকাতা: কেন্দ্রীয় সংস্থার তল্লাশি প্রসঙ্গে আগেও মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। এবার তিনি বললেন, “আমাদের বাড়িতে রোজই ওরা অত্যাচার করছে। কালও সারা রাত…।” তাঁর বক্তব্য থেকে অনুমান করা যাচ্ছে যে কলকাতায় হয়ে যাওয়া সাম্প্রতিক ইডি তল্লাশি নিয়েই এমন মন্তব্য করেছেন তিনি। গতকাল শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। রাতভর চলে সেই তল্লাশি। মূলত তল্লাশি চলেছে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের অফিস ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’-এ।
মঙ্গলবার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন মমতা। সেখান থেকেই কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। তল্লাশি প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “আমাকে কেউ বলেনি। আমি আইনজীবীর কাছ থেকে জানতে পেরেছি। শুনলাম সকাল ৬ টায় বাবুরা বেরিয়েছেন।” এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মমতা এদিন বলেন, “ছেলেটা পরশু দিনই ফিরেছে, আর কাল হঠাৎ চলে গেছে…”। উল্লেখ্য, মার্কিন মুলুকে চোখের চিকিৎসা শেষে গত পরশু অর্থাৎ রবিবার কলকাতায় ফিরেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যয়।
এই মন্তব্যের পরই মমতা বোঝান, তল্লাশি চালানোর নিয়মটা ঠিক কী। তিনি বলেন, “আমার বাড়িতে যেতে গেলে একটা ওয়ারেন্ট থাকতে হবে বা বাড়ির লোককে ডেকে জানাতে হবে। কেউ যদি ভাল ইংরেজি না জানে বা বাংলায় বোঝাতে না পারে, তাহলে তারা আইনজীবীদের সাহায্য নেবে।” অথচ তল্লাশির সময় এই নিয়মগুলো মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ মমতা। তাঁর দাবি, অনেক জায়গায় তালা ভেঙে ঢুকছেন তদন্তকারীরা। পরিচারককেও ঘর থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে তল্লাশির সময় কোনও সাক্ষী রাখা হচ্ছে না।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তার সমস্যাও হতে পারে।’ কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মমতা বলেন, “হতেও পারে কারও বাড়িতে বিস্ফোরক রেখে যাচ্ছ, কে বলতে পারে তোমরা লুকিয়ে বন্দুক রেখে যাচ্ছ না? তোমরা নিজেরাই কোটি কোটি টাকা এনে রেখে যাচ্ছ না?” ‘বেআইনিভাবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
সব শেষে তিনি বলেন, ‘হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে ওরা যায়নি। বাজে কথা… আর গেলে যাবে।’ উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে।
যে অফিসে তল্লাশি চালানো হয়েছে, সেখানে একসময় কাজ করতেন সুজয়কৃষ্ণ। আর এই সুজয়কৃষ্ণ কখনও ‘মালিক’ কখনও ‘সাহেব’ বলে সম্বোধন করেছেন অভিষেককে।