কলকাতা: আছড়ে পড়েছে দানা। রাত জাগছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেগে রয়েছেন মুখ্যসচিবও। এরই মধ্যে রাজ্যের উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে মুখ্যসচিবকে ছয় দফা পরামর্শ দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। দানার ল্যান্ডফলের রাতে স্বাস্থ্য পরিষেবার সংকট কাটাতে মধ্যরাতে মুখ্য সচিবকে ই-মেল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের! এই সঙ্কট অচলাবস্থার নয়। জুনিয়র চিকিৎসকদের পরিভাষায় এই ‘সঙ্কট’ শাসকের জনসাধারণের কাছে নিখরচায় উন্নত পরিষেবার পথে যে কাঁটাগুলি রয়েছে সেই প্রসঙ্গে। তাই সোমবারেই যে চিকিৎসক আন্দোলনে ইতি পড়েনি ঘূর্ণিঝড়ের রাতে সে কথা স্মরণ করিয়ে মুখ্যসচিবকে জুনিয়র চিকাৎসকেরা ই-মেলের শুরুতেই লিখলেন, “সঙ্গত কারণেই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধির উপরে নজর আপনাদের। আমাদের নজর স্থির স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির সঙ্গে সম্পর্কিত ছ’টি বিষয়ে।” কী সেই ছয় পরামর্শ?
প্রথমেই জুনিয়র চিকিৎসকেরা বলছেন এক বোতামে হাসপাতালের শয্যা-তথ্যের কথা। কোন হাসপাতালে প্রতি মুহূর্তে কত শয্যা খালি রয়েছে তার বাস্তব তথ্য না থাকলে কেন্দ্রীয় রেফারেল সিস্টেম কার্যকরী হওয়া সম্ভব নয়। এক মাসের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কোন হাসপাতালে কত খালি শয্যা সংখ্যা তা জানার ব্যবস্থা করতে হবে বলে দাবি জুনিয়র চিকিৎসকদের।
দ্বিতীয়ত, তাঁরা চাইছেন বেড নিয়ে দুর্নীতি বন্ধ হোক। দ্বিতীয় পয়েন্টে তাঁরা লিখছেন ‘চাই স্বচ্ছ তথ্য: দালালরাজ, বেড নিয়ে দুর্নীতি বন্ধে প্রতি ঘণ্টায় শয্যা সংখ্যার আপডেট আবশ্যক’। এরপরেই আসছে তথ্য নির্ভর শয্যা পরিকাঠামোর কথা। হাসপাতালে রোগীর চাপ বিশ্লেষণ করে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিও তোলা হচ্ছে। কোন হাসপাতালে কত রোগীকে বেড না পেয়ে মেঝেয় রেখে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে হচ্ছে তার তথ্য বিশ্লেষণ করা কথাও বলা হয়েছে। ছ’মাসের মধ্যে তথ্য বিশ্লেষণ করে পরিকাঠামো বৃদ্ধির পরামর্শ দিচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
এরপরেই আসছে ত্রুটিমুক্ত রেফার পদ্ধতির প্রসঙ্গ। রেফার-ব্যবস্থায় রোগীর শয্যা পাওয়া যথেষ্ট নয়। রেফার হওয়া হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, রোগীর রোগ নিরাময়ের পরিকাঠামো, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধের সরবরাহও নিশ্চিত করা জরুরি। তা না হলে রেফার অর্থহীন বলে মনে করছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় রেফার ব্যবস্থায় সরকারি নথি তৈরির জন্য পৃথক ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগের কথাও মনে করানো হয়েছে। একইসঙ্গে কোন হাসপাতালে কোন রোগের চিকিৎসায় কী পরিকাঠামো রয়েছে তা সাধারণ মানুষকে জানানোর জন্য হাসপাতালে ডিসপ্লে বোর্ডের দাবিও করা হয়েছে।