কলকাতা : শীতকাল মানেই ধোঁয়া ওঠা ভাতের থালায় ফুলকপি, ধনে পাতার গন্ধ। সারা বছর পিজ্জা, পাস্তায় যতই মন থাকুক, শীতের সবজির জন্য বাঙালি বছরভর অপেক্ষা করে থাকে। তবে এবার শীত পড়লেও সবজি পাতে পড়ছে না মধ্যবিত্তের। বাজারে দাম শুনলেই ছ্যাঁকা লাগছে ক্রেতাদের। কেনার ইচ্ছা থাকলেই ফুলকপি সহ শীতকালীন সবজিতে হাত দেওয়াই যাচ্ছে না।
কলকাতার অন্যতম বড় পাইকারি বাজার হল কোলে মার্কেট। সেখানে গেলে দেখা যাবে সবজির দাম কিছুটা ধরাছোঁয়ার মধ্যে। খুব বেশি দাম নয়। ওই বাজারের বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, কিছুদিন আগে পর্যন্ত মজুত কম থাকায় দাম চড়া ছিল। কিন্তু, আপাতত মজুত বাড়ায় সেই দাম কিছুটা কমেছে। তবে শহরের অন্যান্য বাজারে যে দাম এখনও বেশি, সে কথা জানাচ্ছেন বিক্রেতারাই। কিন্তু সবার পক্ষে তো কোলে মার্কেটে গিয়ে বাজার করা সম্ভব নয়।
কলকাতার আরও একটি বড় বাজার মানিকতলায় গেলে দেখা যাবে ছবিটা একেবারে অন্যরকম। সাত সকালেও বাজারে নেই তেমন ভিড়। মূল্যবৃদ্ধির জন্যই ক্রেতারা সবজিতে হাত দিতে পারছেন না, এ কথা জানাচ্ছেন মানিকতলার বিক্রেতারা। মনে করা হচ্ছে, পাইকারি বাজার থেকে অন্যান্য বাজারে যাওয়ার মাঝেই বেড়ে যাচ্ছে দাম।
পটল (কেজি প্রতি) ১২০ টাকা
উচ্ছে (কেজি প্রতি) ৮০ টাকা
বেগুন (কেজি প্রতি) ৬০ টাকা
ঝিঙে (কেজি প্রতি) ৮০ টাকা
ক্যাপসিকাম (কেজি প্রতি) ৮০-১০০ টাকা
সাদা সিম (কেজি প্রতি) ১০০ টাকা
ফুলকপি (পিস প্রতি)৩০-৪০ টাকা
বাঁধাকপি (পিস প্রতি) ৩০-৪০ টাকা
সজনে ডাঁটা (কেজি প্রতি) ৩০০-৩৫০ টাকা
লাউ (পিস প্রতি) ৭০ পিস
টমেটো (কেজি প্রতি) ৭০ টাকা
পালং (কেজি প্রতি) ৪০ টাকা
গুড়ি কচু (কেজি প্রতি) ৫০ টাকা
ঢ্যাঁড়শ (কেজি প্রতি) ১০০-১২০ টাকা
মূলো (কেজি প্রতি) ৪০ টাকা
চলতি বছরে আগেই সবজির দাম বেশি ছিল। কিন্তু আশা ছিল, শীতকালে অন্তত সবজি কেনা যাবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ।
প্রাথমিক কারণ হল শীতকালের বৃষ্টি। অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় মাঠেই নষ্ট হয়েছে অনেক সবজি। তাই জোগান আসেনি ঠিক মতো। এটা হল স্থানীয় কারণ। আর দেশের অর্থনীতি নিরিখে দেখলে বোঝা যাবে, সার্বিকভাবেই বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম। একদিকে পাইকারি দামের সূচক বেড়েছে। সাধারণত পাইকারি দামের সূচক বেশি হলে, খুচরো বাজারে, অর্থাৎ যে বাজার থেকে সাধারণ মানুষ জিনিসপত্র কেনে, সেখানে প্রভাব পড়ে। আর এ ক্ষেত্রেও সেই কারণে বাজারে দাম বেড়েছে খাদ্যদ্রব্যের। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে রয়েছে পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। সেই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবও পড়েছে বাজারে। তাই এ বছর শীতে সবজির দাম মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে আসবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।