কলকাতা: কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তের হাত থেকে অভিষেককে বাঁচাতে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রাতে এ রকমই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেলিমের এই দাবির পর থেকে ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোহন ভাগবতের যোগসূত্রের প্রমাণ আছে বলেও সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করছেন সেলিম। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, “আদালতে স্বস্তি না পেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেকের দালাল হিসাবে পৌঁছেছেন নাগপুরে মোহন ভাগবতের কাছে। মোহন ভাগবতের কাছ থেকে তিনি নিশ্চয়তা পেয়েছেন ইডি, সিবিআই এখন কিছু করবে। এই নিশ্চয়তা পেয়ে অভিষেক বড় বড় কথা বলছেন।” সেলিমের এই কথাকে অবশ্য গু
সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন তাঁর মুখে শোনা গিয়েছিল আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের নাম। প্রশাসনিক বৈঠকে ভাগবতের জেলা সফরের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে সজাগ থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে সঙ্ঘ প্রধানের কাছে সৌজন্যের ফুল-মিষ্টি পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন জেলা পুলিশের আধিকারিকদের। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করতে ভাগবতের কাছে পৌঁছে যান পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। এই আবহেই সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব মমতা-মোহন ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুললেন। ইডি. সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার সংস্থার তদন্তের হাত থেকে বাঁচতেই মমতা সঙ্ঘ প্রধানের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে দাবি মহম্মদ সেলিমের। এর প্রমাণও তাঁদের হাতে রয়েছে বলে জানিয়েছন সেলিম। যদিও এখনও তা প্রকাশ্যে আনেননি।
আরএসএস-এর সঙ্গে তৃণমূলের যোগসাজসের অভিযোগ এই প্রথম করল না বামেরা। অতীতে সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তীকে হামেশাই বলতে শোনা গিয়েছে, মমতার প্রশ্রয়েই বাংলায় আরএসএস-এর বাড়বাড়ন্ত। বিধানসভায় অধিবেশন কক্ষের অন্দরেও এই ইস্যুতে ধুন্ধুমার তর্ক বেধেছিল বাম ও তৃণমূল বিধায়কদের। বিষয়বস্তু ছিল মমতার শাসনকালে বাংলায় সঙ্ঘের শাখা বৃদ্ধির পরিসংখ্যান। এই আবহেই বাংলার নিত্যদিনের রাজনীতিতে ফের এক বার আরএসএস-তৃণমূল যোগাযোগের পুরনো বিতর্ক নতুন মোড়কে উস্কে দিয়ে শোরগোল ফেলেছেন মহম্মদ সেলিম। রাজ্য বিধানসভা এখন বাম শূন্য। কাজেই বিধানসভার অন্দরে এ প্রসঙ্গ তোলার লোক নেই। কিন্তু মমতার সাম্প্রতিক ‘ভাগবত পাঠ’-এর প্রেক্ষিতে বিধানসভার বাইরেই সেলিম এবং তাঁর দল সিপিএম নতুন করে তাল ঠুকছে। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, মমতার সংখ্যালঘু ভোটের ভাঁড়ারে ঢিল ফেলতেই কী ভাগরত সংসর্গের উত্থাপন।
সেলিমের এই মন্তব্যের পর তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল ও বিজেপি। সেলিমের অভিযোগকে পাগলের প্রলাপ বলে কটাক্ষ করেছে গেরুয়াশিবির। এ নিয়ে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, “মহম্মদ সেলিমের মাথা খারপ হয়ে গিয়েছে বোধহয়। ওনাকে শ্রমজীবী ক্যান্টিনের খাবার খাইয়ে লাল হাসপাতালে চিকিৎসা করানো দরকার। ইসলামিয়া হাসপাতালে ভর্তি করলে আরও তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে।” বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “সেলিম স্বপ্ন দেখেন। নিজের দলটা উঠে যাচ্ছে, শুধু সেটাই দেখতে পান না। উনার কাছে যদি তথ্য প্রমাণ থাকে তাহলে দিন না।” অন্য দিকে তৃণমূলের তরফে বিধায়ক তাপস রায় বলেছেন, “বিধায়সভায় শূন্য। বার বার ভুল করা, ঐতিহাসিক ভুল করা সিপিএমের ধর্ম।”