কলকাতা: ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের পর্যবেক্ষণে, চিকিৎসকদের সাদা কোটে লাগল কালির ছিটে। অসৎ উপায়ে হাজিরা দেওয়ার অভিযোগ উঠল চিকিৎসকদের একাংশের বিরুদ্ধে। ভুয়ো আঙুলের ছাপ তৈরি করে মেডিক্যাল কলেজগুলির একাংশে হাজিরা দিচ্ছেন শিক্ষক চিকিৎসকরা। অভিযোগ তুলেছে মেডিক্যাল কলেজগুলোর নিয়ন্ত্রণ সংস্থা NMC অর্থাৎ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। অভিযোগ মারাত্মক বলে মেনে নিচ্ছে চিকিৎসক সংগঠনগুলিই। অভিযোগের ভিত্তিতে NMC-র কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়েছেন চিকিৎসক সংগঠনের নেতারা।
এবার মেডিক্যাল কলেজগুলোতে শিক্ষক চিকিৎসকদের উপস্থিতি নির্ধারিত করতে আধার নির্ভর বায়োমেট্রিকের ওপর কড়াকড়ি দিয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। কিন্তু আদতে গোল যে সেখানেই। ফিঙ্গার প্রিন্টই হয়ে যাচ্ছে নকল। অর্থাৎ উপস্থিত না থেকেই পড়ে যাচ্ছে ‘অ্যাটেনডেন্স’!
এএইচএসডি-র চিকিৎসক নেতা মানস গুমটা বলেন, “এরকমও হয় নাকি? আধারকার্ডে যে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়া আছে, সেটা নকল করা যায়, জালি করা যায়? এটা তো আমরা প্রথমবার শুনছি। এটা যদি হয়, তাহলে তো ভয়ঙ্কর ব্যাপার। এটা তো ভয়ঙ্কর সাইবার ক্রাইম। কমিশনের উচিত তদন্ত করা, কেবল নোটিস দিলেই হবে না। ”
কিন্তু কীভাবে এড়ানো যাবে এই ক্রাইম? কী বলছেন সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞরা?
সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ অভিষেক মিত্র বলেন, “ফিঙ্গার প্রিন্টের জায়গায় যদি ফেস রেকগনিশন হত, কিংবা যদি ‘টু ফ্যাক্টর অথিনটিকেশন’ হয়, অর্থাৎ ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলে মোবাইলে OTP আসবে, সেই OTP দিলে, তবে অ্যাটেনডেন্স মার্কিং হবে, সেক্ষেত্রে তো জায়গায় প্রেজেন্ট থাকতেই হচ্ছে। এছাড়া আরও উন্নত ধরনের ব্যবস্থা এসেছে। সেক্ষেত্রে কিন্তু এতটা সহজে ফেক করা যাবে না।”
কিন্তু এই জালিয়াতির সঙ্গে কারা যুক্ত, সে বিষয়টা প্রকাশ্যে আনছেন না ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন। কারণ হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ব্যাঙের ছাতার মতো বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ গড়ে উঠেছে, সেখানে ছাত্র শিক্ষক সমানুপাতে নেই। সেই জায়গাতেই এই গরমিলের অভিযোগ উঠছে। পাশাপাশি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞরাই বলছেন, সিলিকন ফিঙ্গার যেহেতু মেডিক্যাল কলেজগুলোতে সহজলভ্য, তাই সেখানে জালিয়াতির পন্থাটাও অনেক সহজ।