কলকাতা: ২৬৪ ঘণ্টা পর অনশন প্রত্যাহার করল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। একইসঙ্গে জানিয়ে দিল, ২২ ডিসেম্বর নিজেরাই ছাত্র সংসদের নির্বাচন করবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর রাজি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ২২ ডিসেম্বর নিজেদের উদ্যোগেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ডাক দিলেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। প্রশাসনিক বৈধতা না থাকলেও সমর্থনের কোনও অভাব হবে না বলেই আশাবাদী তাঁরা। সোমবার এই সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। জানিয়ে দেন, নিজেদের আন্দোলন নিজেরাই তৈরি করবেন। সত্যিই যদি ২২ ডিসেম্বর ভোট হয়, তা হলে ১৯২৮ সালের পুনরাবৃত্তি হবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। এখানকার ছাত্রদের দাবি, ব্রিটিশ আমলে ছাত্র সংসদের স্বীকৃতি দিতে চাওয়া হয়নি। সেই সময় নিজেদের ছাত্র সংসদ নিজেরা করেছিলেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা।
২২ ডিসেম্বর নিজেদের ছাত্র সংসদ নিজেরাই তৈরি করবেন বলে জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। সোমবার চিকিৎসক পড়ুয়াদের সাধারণ সভা ছিল। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত হয়। এরপরই ১২ দিনের অনশন ওঠে সোমবার সন্ধ্যায়। এদিন ডক্টর বিনায়ক সেনের হাত ধরে অনশন প্রত্যাহার হয়। আন্দোলনকারী এক ছাত্র সৌম্যদীপের কথায়, “যাঁদের জন্য এই ছাত্র সংসদ তাঁরাই আজ বৈঠক করে ওপেন জিবিতে ঠিক করেছেন ছাত্রদের একটা ইউনিয়ন হবে। সমস্ত বর্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্র যখন চাইছেন, ওরা করবেন। আর কলেজ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের বিষয়ে বলতে গেলে কর্তৃপক্ষ তো এখন কলেজে অনুপস্থিত।”
ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে অনশন। সেই দাবি মানেনি স্বাস্থ্য প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে নিজেরাই ছাত্র সংসদ গঠনের সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলনকারীরা। ২২ ডিসেম্বর বিনায়ক সেন, অম্বিকেশ মহাপাত্র, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, সুজাত ভদ্রের তত্ত্বাবধানে হবে সেই ভোট।
২২ ডিসেম্বর কলকাতা মেডিক্যালে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তবে এরপর কোনও নোটিস ছাড়াই মৌখিকভাবে জানানো হয়, আপাতত এই ভোট স্থগিত রাখা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা। তাঁরা অভিযোগ তোলে, বাইরে থেকে রাজনৈতিক দলের প্রভাব জিইয়ে রাখতেই এই ভোট বাতিল করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় স্বাস্থ্যভবনের সঙ্গে বৈঠক করে। তবে রফাসূত্র মেলেনি। এরইমধ্যে পাঁচ ছাত্র আমরণ অনশনে বসেন। দুই ছাত্র অসুস্থও হয়ে পড়েন এই অনশন চলাকালীন। একজনকে আইসিইউয়ে নিয়ে যেতে হয়। তবে এরপরও সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছে কর্তৃপক্ষ। এবার আরও কড়া অবস্থানে পড়ুয়ারাও।