কলকাতা: ও পার বাংলার জঙ্গি নেটওয়ার্ক ছড়িয়েছে এ পার বাংলাতেও! নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গেও! গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, বাংলাদেশে জুলাই মাসের আন্দোলনের আগেই এ রাজ্যে ঢুকে পড়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরির! কী ভাবে জানেন? বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে! মালদহের মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকে বৈষ্ণবনগরে যায় ২ জঙ্গি।
এমনই শিহরণ জাগানো তথ্য সামনে এসেছে গোয়েন্দা সূত্রে! শুধু কী তাই? এক দিকে, বাংলাদেশি পড়ুয়াদের জন্য দিল্লিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে ভিসা অফিস রয়েছে, তা সরানোর জন্য দরবার করছে ইউনূস সরকার! অথচ ছাত্র পরিচয় দিয়ে, টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ২ জঙ্গি ঢুকে পড়েছিল ভারতে! গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গিদের নাম আমির ওরফে সাব্বির ও রিদওয়ান মারুফ। সূত্রের খবর, ওই ২ জঙ্গি বৈষ্ণবনগরের এক যুবকের বাড়িতে যায়। বৈষ্ণবনগরের একাধিক এলাকাতেও যায় তাঁরা।
বেশ কয়েকটি বৈঠক করে দু’জন। এর পর তারা বৈষ্ণবনগর থেকে চলে যায় ধুলিয়ানে। সেখানেও গ্রামের যুবকদের নিয়ে বৈঠক করে দু’জন। তদন্তে জানা গিয়েছে, ২ জঙ্গিই রাজশাহীর বাসিন্দা। রিদওয়ান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আমির ওরফে সাব্বির হিজবুত তাহরিরের পুরনো সংগঠক এবং নেতা। ৩০ মে তো তারা চলে গেলেও বৈষ্ণবনগর ও ধুলিয়ানে রক্তবীজ পুঁতে গিয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই ভয়ঙ্কর তথ্যও উঠে এসেছে গোয়েন্দা রিপোর্টে।
সূত্রের খবর, হিজবুত তাহরিরের ওই ২ সদস্য হাত মেলায় আরেক নিষিদ্ধ সংগঠন সিমির সদস্যের সঙ্গে। বৈষ্ণবনগরে যার বাড়িতে দুই জঙ্গি এসেছিল, সেই যুবকের সঙ্গেও সিমি-র পুরোনো যোগ খুঁজে পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তদন্তে ওই যুবক জানিয়েছে, ধুলিয়ানে তার মামার বাড়ির গ্রামে ওই ২ জনকে নিয়ে গিয়েছিল সে। সামাজিক মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আলাপ বলে দাবি বৈষ্ণনগরের যুবকের। খিলাফত ও ইসলাম চর্চা নিয়ে ওই ২ জঙ্গির সঙ্গে আলোচনা হয় বলে দাবি মালদহের যুবকের। মালদহ এবং ধুলিয়ানের একাধিক যুবকের কার্যকলাপ তখন থেকেই গোয়েন্দা নজরে।
গোয়েন্দাদের দাবি, এই দুই যুবক ছাড়াও আরও কয়েকজন সম্প্রতি এই সমস্ত এলাকায় খিলাফত নিয়ে বৈঠক করেছে। গোয়েন্দাদের জোরালো সন্দেহ, এই এলাকাগুলোয় সংগঠন বিস্তারের চেষ্টা করছে নিষিদ্ধ হিজবুত তাহরির। এই তথ্য় সামনে আসতেই উদ্বেগ বাড়তে গোটা বাংলাজুড়েই। মুর্শিদাবাদ-মালদহ আপনার আমার বাড়ির থেকে কিন্তু খুব একটা দূরে নয়। তাঁদের কর্মকান্ড আপনার আমার বাড়ির আশেপাশে কোথাও হচ্ছে কী না, তা সত্যি কি আমরা জানি? উত্তর এখনই নেই। এদিকে বর্তমানে ওপার বাংলায় চলছে ব্যাপক হানাহানি। সেই উত্তেজনার আঁচ এসে পড়েছে এপারেও। এমতাবস্থায় দুই জঙ্গির গতিবিধি নিয়ে নতুন করে বাড়ছে চাপানউতোর।