কলকাতা : পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) প্রচারে তিনিই যেন হয়ে উঠেছে বাংলায় পদ্ম শিবিরের অন্যতম প্রধান মুখ। কুণাল-প্রজাপতি বিতর্কে তাঁর হয়ে ব্যাট ধরতে দেখা গিয়েছে খোদ তৃণমূল সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেবকে (Dev)। এমনকী তাঁকেই কিছুই দিন আগে বলতে শোনা গিয়েছিল ‘তৃণমূলের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত নন’। সেই মিঠুন চক্রবর্তীই নাকি যোগাযোগ রাখছেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) সঙ্গে। জল্পনা উস্কে বিস্ফোরক দাবি করছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁর স্পট দাবি, ‘আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। মুখ্যমন্ত্রী যাতে রেগে না যান তার জন্যই রাখছেন যোগাযোগ।’ এদিন একথা বলতে শোনা গিয়েছে ফিরহাদকে। তিনি বলেন, “সব ফাঁকা আওয়াজ। মিঠুনদা তো আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন যাতে দিদি রেগে না যায়। মিঠুনদা তো নিজেই তৃণমূলের সঙ্গে গন্ডগোল করতে চাইছেন না। তিনি কিছু কারণে বিজেপিতে গিয়েছেন। সেটা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু, তিনি নিজেই বলছেন যাতে তৃণমূল না রেগে যায়।”
ওর কাছে কী প্রমাণ রয়েছে? ফিরহাদকে পাল্টা প্রশ্ন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। প্রচারের আলোয় থাকতেই এসব করছেন ফিরহাদ, তোপ শুভেন্দুর। ফিরহাদকে কর্মচারী বলে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, “তাঁর কাছে কী প্রমাণ রয়েছে? এসব কথাবার্তা বলে প্রচারে থাকতে চাইছেন।” এদিকে কিছুদিন আগেই বাংলায় ভোট প্রচারে এসে মিঠুন দাবি করেছিলেন বহু তৃণমূল বিধায়কই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। অচিরেই ভিড়তে পারেন বিজেপিতে। তাঁর স্পষ্ট দাবি ছিল শুধু বিধায়করাই নন, যোগাযোগ রাখছেন খোদ তৃণমূল সাংসদরা। মিঠুন বলেন, “২১টা বেড়েছে। আমি কোনও ব্যাকআপ ছাড়া কথা বলি না। সময় এলে দেখতে পাবে। তাঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তৃণমূলের সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত নন, অনেক ভাল লোক আছেন। যাঁরা ভাল তাঁরা দেখবেন শান্ত। এদের দিকে নজর রাখুন। এটুকুই হিন্ট দিলাম। বিধায়ক-সাংসদ সবাই রয়েছেন। তাঁরা যদি আসেন তাঁদের আর ফিরে যাওয়ার রাস্তা নেই। আর এদিক থেকে কেউ যেতে চাইলে বলব তাড়াতাড়ি যান। আমরা মুক্ত হয়ে যাব। নিজেও কষ্ট পাবেন না। আমাদেরও কষ্ট দেবেন না।”
এমতাবস্থায় এবার ফিরহাদের ‘মিঠুন’ দাবিতে শোরগোল শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সাম্প্রতিক অতীতে নিজের দলবদলের রেকর্ড নিয়ে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছিল খোদ মিঠুনকেই। এমনকী মমতাকে নিজের রাজনৈতিক গুরু বলে দাবি করেছিলেন ‘মহাগুরু’। খানিক ব্যাঙ্গাত্মক ভঙ্গিতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরাট বড় ফলোয়ার। আমার রাজনৈতিক গুরু উনি। উনি যা যা করেছেন, আমিও তাই তাই করেছি। উনি কংগ্রেসে ছিলেন। আমি কংগ্রেসে ছিলাম। পরবর্তীতে, সিপিএমকে হারাতে উনি একটা অংশের হাত ধরেন। আমি তাদের নাম করছি না। আমিও সেই মুভমেন্টে ছিলাম। তারপর উনি ১০ বছর এনডিএ-র সঙ্গে ছিলাম। আমি এখন বিজেপিতে।”