কলকাতা : ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর বর্ষীয়ান নেতা মুকুল রায়কে বিধানসভার পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তখনও তিনি তৃণমূল বিধায়ক হিসেবেই বিবেচিত হতেন। মুকুলকে ওই পদ দেওয়ায় প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিরোধী দলের অনেক নেতাই। বিগত এক বছরে মুকুল-বিতর্ক গড়িয়েছে অনেক দূর। দীর্ঘ শুনানির পর জানা গিয়েছে, মুকুল বিজেপিতেই আছেন। এ সবের পরও সেই পিএসি চেয়ারম্যান পদে থেকে যাচ্ছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়। ওই কমিটির মেয়াদ বাড়াতে শুক্রবার মোশন আনা হল বিধানসভায়।
পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি তথা পিএসি-সহ মোট ১৫ টি কমিটির মেয়াদ ৪ জুলাই শেষ হওয়ার কথা। সেগুলোর মেয়াদ বাড়ানোর জন্যই মোশন আনা হচ্ছে। ওই সব কমিটির সদস্য বা চেয়ারম্যান বদল করা হচ্ছে না। সুতরাং পিএসি-র চেয়ারম্যান হিসেবে রয়ে যাচ্ছেন মুকুল রায়ই।
বিধানসভায় মোট ৪১ টি কমিটি রয়েছে। যার মধ্যে ২৬ টি স্ট্যান্ডিং কমিটি ও ১৫ টি হাউজ কমিটি। সাম্প্রতিক উপ নির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয় সহ যাঁরা জয়ী হয়ে বিধায়ক হয়েছেন, তাঁদের ওই সব কমিটির সদস্যপদে আনা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য কোনও পরিবর্তন করা হচ্ছে না। আপাতত এক বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে ওই সব কমিটিগুলির।
উল্লেখ্য, মুকুল রায় বিধায়ক হওয়ার পর তাঁর নাম পিএসি-র চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শাসক দলের যুক্তি ছিল, মুকুলের অভিজ্ঞতার দাম দিতেই এই পদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। যদিও প্রথম থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব ছিলেন বিরোধীরা। শুভেন্দুদের বক্তব্য ছিল, বরাবর এই পদ দেওয়া হয় বিরোধী দলের বিধায়ককে। কিন্তু তৃণমূল বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও কেন মুকুল পেলেন সেই পদ?
বিতর্কের জল গড়ায় অনেক দূর। মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজ করার জন্য এবং সেই সঙ্গে তাঁকে পিএসি চেয়ারম্যান নিযুক্ত করার বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারী ও অম্বিকা রায় পিটিশন জমা দিয়েছিলেন বিধানসভায়। আদালতেও গড়ায় সেই মামলা। সম্প্রতি দলত্যাগের অভিযোগ খারিজ হয়ে গিয়েছে বিধানসভায়। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, মুকুল রায় বিজেপিতেই রয়েছেন। আর এবার পিএসি পদেও রেখে দেওয়া হল তাঁর।
তবে বিধানসভা সূত্রে জানা যায়, যে পিএসি কমিটি নিয়ে এত বিতর্ক, গত এক বছরে সেই কমিটির প্রায় কোনও বৈঠকেই দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বৈঠক করেছেন তাপস রায়। সদস্যরাও উপস্থিত থাকেন না খুব একটা।