মহুয়ার ঘোষণায় ৩ বার ‘মুসলিম’, ‘কোনও অঘটন ঘটেছে?’ প্রশ্ন অধীরের, ‘শ্রুতিকটু’ লাগছে শিক্ষক মহলেরও

TV9 Bangla Digital | Edited By: ঋদ্ধীশ দত্ত

Jul 23, 2021 | 12:20 AM

ফল ঘোষণা করতে গিয়ে রুমানার ধর্মীয় পরিচিতির কথা উল্লেখ করেন সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস। একবার নয়, একাধিকবার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই জলঘোলা শুরু হয়েছে।

মহুয়ার ঘোষণায় ৩ বার মুসলিম, কোনও অঘটন ঘটেছে? প্রশ্ন অধীরের, শ্রুতিকটু লাগছে শিক্ষক মহলেরও
উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম স্থানাধিকারী রুমানার ধর্মীয় পরিচিতি উল্লেখ নিয়ে বিতর্কে সংসদ সভাপতি, অলংকরণ-অভীক দেবনাথ

Follow Us

কলকাতা: উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে। প্রথম স্থান অধিকার করেছেন মুর্শিদাবাদের কান্দির ছাত্রী রুমানা সুলতানা। এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু বিতর্ক বাঁধল রাত বাড়তেই। কারণ, ফল ঘোষণা করতে গিয়ে রুমানার ধর্মীয় পরিচিতির কথা উল্লেখ করেন সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস। একবার নয়, একাধিকবার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই জলঘোলা শুরু হয়েছে। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, উচ্চ মাধ্যমিকে কৃতী ছাত্রী হিসেবে রুমানার মেধাই কি যথেষ্ট নয়? তাহলে বারবার রুমনার ধর্মীয় পরিচয়ের কথা কেন উল্লেখ করলেন সংসদ সভাপতি?

ঠিক কী বলেছিলেন সংসদ সভাপতি? ফল ঘোষণার সময় এ দিন তাঁকে বলতে শোনা যায়, “সর্বোচ্চ নম্বরের ভিত্তিতে একটা ইতিহাস সংসদে হয়েছে। সেটা একটু বলতে ইচ্ছা করছে। যিনি এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন, তিনি একজন মুসলিম কন্যা। মুসলিম, মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে। একজন মুসলিম মেয়ে। তিনি এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন।” ঠিক তিনবার মুসলিম কথাটি বলতে শোনা যায় তাঁকে। যা নিয়ে নানা মহলে সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী থেকে বামেদের কনীনিকা ঘোষ, এমনকী বিজেপিও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। ফলে আপতভাবে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক একটি বিষয়ই রাজনীতিকদের আলোচনার প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছে।

গোটা বিতর্ক নিয়ে সবচেয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। ফেসবুকে একটি পোস্ট করে তিনি প্রশ্ন তুলে দেন, “মুসলিম মেয়ে বলে কি কোনও অঘটন ঘটেছে?” তিনি আরও লেখেন, “মুসলিম মহিলা প্রথম হয়েছে’ বলে যারা বারবার বলছে, তাদের এত অবাক কেন হতে হচ্ছে! মেধা বুদ্ধি পরিশ্রম করে প্রথম হতে হয়। কাউন্সিলের প্রেসে শ্রুতিকটু শুনতে লাগে যখন বলা হয় ‘প্রথম হয়েছে মুসলমান মেয়ে’! ছাত্রীর নাম দেখে সে কোন ধর্মের বোঝানোর দায়িত্ব না নিলে খুশি হব। একজন ছাত্রী ফার্স্ট, ছেলেদের থেকে এগিয়ে চলেছে মেয়েরা ― এটা লক্ষ্যণীয়।”

অধীরের ফেসবুক পোস্ট

বামেদের তরফে কনীনিকা ঘোষও সরব হয়েছেন বিষয়টি নিয়ে। তিনি ফেসবুকে লেখেন, “বামফ্রন্টে সময় ছাত্রীর ধর্ম আলাদা করে উল্লেখ করতে হয়নি। শিক্ষা নাকি মানুষকে মানবতা শেখায়, ছিঃ।”

ফেসবুকে সরব কনীনিকা

বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন কাজি মাসুম আখতারের মতো পদ্মশ্রী প্রাপক শিক্ষকও। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “আজ সভাপতির ঘোষণায় মনে হল উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ছাত্রীটির ধর্ম পরিচয়ই মূল যোগ্যতা! মুসলিমদের বিপুল ভোটে জয়ী সরকারের উক্ত আধিকারিক কি কারও অঙ্গুলি হেলনে মুসলিমদের বিপুল উন্নয়ন বোঝাতে এই বিড়ম্বনা সৃষ্টি করলেন, নাকি মুসলিমদের মর্যাদার দৈন্যদশা বোঝাতে এমনটাই দস্তুর!”

বিস্মিত কাজি মাসুম আখতার

বিজেপির মিডিয়া সেলের ইনচার্জ সপ্তর্ষী চৌধুরীরও একই সুর। তিনি টুইটে লিখেছেন, “ভাগ্যিস বেগম রোকেয়া বাঙালি ছিলেন..কোনও সরকার যে এই ভাবে ধর্ম উল্লেখ করে ফল ঘোষণা করে জানা ছিল না।”

 

 

 

Next Article