কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে। কিন্তু কতটা কষ্ট করলে কেষ্টর দেখা পাওয়া যায়! জানে কি সিবিআই? বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি (আছেন, থাকবেন তো?) কিন্তু সার্থক নামা। ডাকনামের দিক থেকে তো বটেই। ভাল নামের দিক থেকেও। অভিধান ঘেঁটে দেখা গেল, অনু-ব্রত মানে অনুকূল কাজ করে এমন, সর্বদা সহায়ও বলতে পারেন। অনুব্রত মণ্ডল, মসিহা। কাদের? সেটা জানতেই তো উদগ্রীব হয়ে আছে সবাই এবং সিবিআই। তাই তো, নেমন্তন্ন করেছে নিজাম প্যালেসে। কিন্তু, ওই যে। চাইলেই কি আর কেষ্টকে পাওয়া যায়। কষ্ট করতে হয়। অপেক্ষা করতে হয়। সিবিআই-এর অপেক্ষাও তাই বেড়েছে।
বিভিন্ন গ্রন্থে আছে, গোপ বালক শ্রীকৃষ্ণের জীবেপ্রেমের কথা। গাভীর গায়ে হেলান দিয়ে কৃষ্ণ বাঁশি বাজাচ্ছেন। এমন ক্য়ালেন্ডার এখনও কোনও না কোনও বাড়ির দেওয়ালে ঝুলতে পারে। তাই কৃষ্ণ বা কেষ্টর সঙ্গে গরু-র সম্পর্ক বহুদিনের। কিন্তু কলির কেষ্ট যে গরু পাচারে অভিযুক্ত! আপাতত, গরু পাচারের খাতাই খুলেছে সিবিআই। শোনা যাচ্ছে, অপেক্ষায় আছে কয়লা পাচার, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের মতো সব মামলার তদন্ত। বড় বড় লোকেদের বড় ব্যাপারই হয়। মারি তো গন্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার। এই সব প্রবাদ প্রবচনের চল তো আর এমনি এমনি হয়নি। যা রটে, তার কিছু তো ঘটে। কিন্তু গরু পাচারের ঘটনায় অনুব্রত মণ্ডলের কি ভূমিকা? আপাতত, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে সিবিআই জানিয়েছে, গরু পাচারের যে কোটি কোটি টাকা ইধার থেকে উধার হয়েছে। তাতে হিস্যা ছিল অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের। সায়গল হোসেনের নাম শুনেছেন তো? আরও অনেকের সঙ্গে অনুব্রত-র দেহরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন সায়গল। কিন্তু, রক্ষী সায়গলকে একটু বেশিই ভরসা করতেন অনুব্রত। লোকে বলে অনুব্রত-র ডানহাত এই সায়গল। তো সেই সায়গলের ১০০ কোটির সম্পত্তি এখনও পর্যন্ত খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। মজার ব্যাপার সায়গলের সম্পত্তির মধ্যে ৪৯টির ডিডে নাম রয়েছে অনুব্রত এবং তাঁর আত্মীয়দের। বুঝুন কাণ্ড। কানে টান পড়লে, সুরসুর করে যে মাথা কীভাবে চলে আসে, এসব না দেখলে বিশ্বাস হত না।
এই যেমন এখন শোনা যাচ্ছে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে না কি কয়লা পাচারের যোগও আছে। এই যে অপা’র সম্পত্তি, টাকার পাহাড় সে সব যতই চকচক করুক, আসলে তো কালো টাকা। সেই সব কালো টাকা না কি সাদা হত কয়লার মাধ্যমে। এমনিতে বলে কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। কিন্তু, কালো টাকা যে কয়লা ছুঁয়ে দিলে, ধবধবে হয়ে যায়, তাও তো এই নেতা এবং তাঁদের সাঙ্গোপাঙ্গরা না থাকলে জানাই যেত না। অবশ্য বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকুই বা আমরা জানি। এই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি গেলেন এবং এলেন, কী হল? কেউ কি জানেন? শোনা যাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবারের দিল্লি সফর না কি অনেকটা দিল্লি কা লাড্ডুর মতো হয়েছে। বোঝা যাচ্ছে না লাভ হল না কি হল না!
এই সব কথা কখন হবে জানেন তো? রাত ৮.৫৭। টিভি নাইন বাংলায় শুরু হবে, না বললেই নয়।