চাপ তৈরি হয়েছে। কিন্তু চাপের কাছে নতি স্বীকার করা যাবে না। বরং পাল্টা আক্রমণে যেতে হবে। ওই ইংরেজিতে যাকে বলে অফেন্স ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স। সেই টোটকাই তৃণমূলের কর্মীদের দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেটা করতে গিয়ে, কেষ্টর পাশে তো দাঁড়িয়েছেনই। সঙ্গে সঙ্গেই অল আউট আক্রমণ করেছেন বিজেপিকে। গরুপাচার, কয়লাপাচার নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, বলেছেন, বিএসএফ কোন মন্ত্রীর অধীনে? কোল ইন্ডিয়া কোন মন্ত্রীর অধীনে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ঝাড়খণ্ডের বিধায়ক কেনাবেচা রুখে দিয়েছে তাঁর পুলিশ। আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়েছেন, সিবিআই-ইডিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নাস্তানাবুদ করতে চাইছে বিজেপি। সেজন্যই কয়লাপাচার তদন্তে রাজ্যের আট আইপিএসকে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি।
একজন শিক্ষা দুর্নীতিতে নাম জড়ানোয় জেলে। আরেকজন, গরু পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে, CBI হেফাজতে। তাহলে, একজন স্নেহ-মমতা পেলেও, অন্যজনের কপালে কেন এমন অবজ্ঞা? তাহলে কি দুর্নীতি ইস্যুতে বাছবিচার করছে তৃণমূল? বেচারা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রিত্ব গেছে, মহাসচিবের মতো সারা বিশ্বে প্রায় বিরল একটা পদে ছিলেন, সেটাও গেছে। শেষে কি না, সিউড়ির হাটে একসময় মাগুর মাছ বিক্রি করা কেষ্ট মণ্ডলের কাছেও দশ গোল খেলেন, বহু জাতিক কোম্পানির উচ্চ পদে চাকরি করা পার্থবাবু? এরপর আর মান সম্মান বলে কিছু অবশিষ্ট থাকল কি? এবার বুঝতে পারছি, কেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রেসিডেন্সি জেলে, ঋষি অরবিন্দের সেলে সময় কাটাতে চেয়েছিলেন। বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ প্রেসিডেন্সি জেলে থাকাকালীনই আধ্য়াত্মিকতায় আকৃষ্ট হন। কে জানে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এরপর কী করবেন? এমনিতেই জেলে কথামৃত পড়ছেন। নিন্দুকেরা আবার ফুট কেটে বলছেন, একদম ঠিক বই বেছে নিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। টাকা মাটি মাটি টাকার মর্ম, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের থেকে বেশি আর কে উপলব্ধি করতে পারবে বলুন তো?
যাকগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় যখন তৃণমূলের আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড। তখন আমরাও আলোচনায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের থেকে কিঞ্চিত্ বেশি গুরুত্ব দেব অনুব্রত মণ্ডলকেই। ঘুরে ফিরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম আসবে, কিন্তু মনোযোগ থাকবে কেষ্ট মণ্ডল এবং তৃণমূলের কেমিস্ট্রিতে। বলব সেই কথাগুলো যে কথাগুলো আজ না বললেই নয়।