কলকাতা: বাজারের একটা নিয়ম আছে। পছন্দের জিনিস বেছে নেওয়ার সুযোগ আছে ক্রেতার। এবার ধরে নিন, বাজারে দোকান মাত্র দুটো। হ্যাঁ, দুটো। আর কোনও অপশন আপনার হাতে নেই। যা কিনতে হবে, ওই দুটো দোকান থেকেই কিনতে হবে। এবার আপনার প্রয়োজনীয় জিনিস দুটি দোকানেই পচা, খারাপ কোয়ালিটির। তখন কী করবেন? না কিনে, বাড়ি ফিরে আসবেন? বাজারের কথা এবার ভুলে যান। ভাবুন গণতন্ত্রের কথা। আর দুটো দোকানের জায়গায় কল্পনা করুন দুটো রাজনৈতিক দল (Political Party) বা জোটকে। এবং সেই দুই দল বা জোটই একইরকম খারাপ। আপনি কী করবেন? নোটা থাকলেও উপায় নেই। একটা না একটা দল বা জোট জিতবেই, সরকার গড়বেই। বাস্তবের সঙ্গে কোনও মিল পাচ্ছেন কি? পেলে নেহাতই কাকতালীয়!
অর্থাত্, এক্ষেত্রে আপনার বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা নেই। আছে বেছে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা। ২০২৪ এগিয়ে আসছে। দেশে লোকসভা নির্বাচন হবে। কোনও কোনও শক্তিকে সরকারের জন্য আমাদের বেছে নিতেই হবে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ১০ বছর ধরে ক্ষমতায়। চ্যালেঞ্জার কে? হলপ করে বলতে পারি, এক কথায় উত্তর দেওয়া মুশকিল। খানিক থতমত খাওয়ার পর বিড়বিড় করে হয়তো বলতে হবে, বিরোধী জোট। এবার দ্বিতীয় প্রশ্ন। বিরোধী জোটের কাণ্ডারী কে? বিরোধী জোটে কারা থাকবেন? কংগ্রেস বা বামেদের সঙ্গে কটা আঞ্চলিক দল জোটে আসবে? দেখবেন, উত্তর আবার গুলিয়ে যাবে। দিল্লিতে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হলেও, বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা হবে? হবে। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে। তারপর? কংগ্রেস-তৃণমূল কাঁধে কাঁধ মেলাবে? রাষ্ট্রপতি ভোটে (Presidential Election) হয়নি, উপরাষ্ট্রপতি ভোটেও হয়নি। যেখানে দেশের সামনে উদাহরণ তৈরির সুযোগ ছিল, সেখানে জোটবদ্ধ হওয়া দূরে থাক। বিরোধীরা ছড়িয়ে একসা করেছেন। তারপরেও দেশের মানুষ বিকল্প হিসেবে কাকে পাবেন? মূল্যবৃদ্ধি-সহ একাধিক ইস্যুতে আজ দিল্লিতে তুলকালাম বাঁধিয়েছিল কংগ্রেস। কংগ্রেস রাজপথে নামলেই তর্জন-গর্জন করে। পুলিশের সঙ্গে লড়াই হয়। আজও সেসব হয়েছে। রাহুল-প্রিয়ঙ্কা একাধিক নেতাকর্মীকে আটকেছে পুলিশ। কিন্তু, এভাবে একা একা লড়ে, রাস্তা কাঁপানো যায়। ভোট পাওয়া যাবে? তৃণমূলের আক্ষেপ, হর্স ট্রেডিং-এর হাতে গরম প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঝাড়খণ্ডের ৩ কংগ্রেস বিধায়কের কাছ থেকে কাঁড়িকঁড়ি টাকা উদ্ধারের পর, বিজেপিকে কলার চেপে ধরার সুযোগ রয়েছে। এরাজ্যের CID তদন্তে গিয়ে দিল্লি, অসমে বাধা পাচ্ছে। তারপরও কংগ্রেস চুপ কেন! যার বিয়ে তার হুঁশ নেই আর পাড়া পড়শির ঘুম নেই!
তৃণমূলের এই অভিযোগ, তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। বলেছে তাঁরা সরব, সজাগ, সোচ্চার। রাস্তাতেই আছেন। আছেন তো বটেই। কিন্তু, সেই রাস্তা কি বিরোধী জোটের রাস্তা মসৃণ করছে? দিল্লিতে দোস্তি আর বাংলায় কুস্তি করে জনতার আস্থা অটুট রাখা সম্ভব? না কি সেটিং সর্বত্রগামী? মমতা-মোদী মিটিং-এর পর ইডি তদন্ত কোনদিনে বাঁক নেয়, তা নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। পার্থ-অর্পিতার বরাত কি দিল্লির সাক্ষাতে নির্ভর করছে? এই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে। সত্যিই কি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত অন্ধ গলিতে বন্ধ হয়ে যাবে? চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য আজ থাকছে। থাকছে রেপোরেট বেড়ে যাওয়ার কথা। প্রেসিডেন্সিতে এসএফআই-টিএমসিপি সংঘাত-সহ অনেক কথা। যে কথাগুলো না বললেই নয়। টিভি নাইন বাংলায়, রাত ৮.৫৭।