সৌরভ দত্ত: স্বাস্থ্যসাথী কার্ড (Swastha Sathi) থাকলে ফেরানো যাবে না কোনও রোগীকে। সোমবারই শিলিগুড়ি থেকে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সেইদিনই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের হেলথ স্কিম কার্ড নিয়ে নতুন অ্যাডভাইজারি প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর অধীনস্থ স্বাস্থ্যসাথী সমিটি।
স্বাস্থ্যসাথী সমিতির তরফে দু’টি অ্যাডভাইজারি জারি করা হয়েছে। একটি মূলত বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলির জন্য। দ্বিতীয় অ্যাডভাইজারিটি সরকারি হাসপাতালের জন্য। প্রথম যে অ্যাডভাইজারি তাতে বলা হয়েছে, ১৯০০-এর বেশি ‘স্পেসিফায়েড প্যাকেজ’ রয়েছে। অর্থাৎ যে রোগই হোক না কেন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় এরকম ১৯০০ প্যাকেজ রয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য সমিতি সেলের পর্যবেক্ষণ, প্যাকেজ বহির্ভূত টাকা নিয়ে রোগীর চিকিৎসা করছে একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল। প্যাকেজ বহির্ভূত এই খরচ নিয়েই অ্যাডভাইজারিতে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়েছে, ১৯০০-এর বেশি প্যাকেজ আছে। রোগীর যে রোগই হোক না কেন, তা কোনও না কোনও প্যাকেজের আওতায় অনায়াসে চলে আসে। যদি এমার্জেন্সি হয়, সে ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মেডিসিন ও সার্জারিতে প্যাকেজ বহির্ভূত বিল করা যাবে। বিপুল সংখ্যক মানুষ স্বাস্থ্যসাথীর আওতায়। সরকার মানুষের সুবিধার জন্যই এই প্রকল্প চালু করেছে। এদিকে যদি ‘আনস্পেসিফায়েড প্যাকেজ’-এও রাশ টানা দরকার বলে মনে করছে স্বাস্থ্যসাথী সমিতি।
সোমবারই শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুনেছি, বহু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্য সাথী কার্য নিচ্ছে না। এমনটা হলে আগে চিহ্নিত করুন। দ্রুত তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। দরকার হলে আমি তাদের লাইসেন্স বাতিল করব।”
বহু ক্ষেত্রেই বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, কেউ কেউ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে চায় না। মুখের উপর স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করেই চিকিৎসা করাতে হবে। কেউ কেউ আবার বলে, স্বাস্থ্যসাথীর আওতাধীন হলেও কোনও নির্দেশিকা তারা পায়নি। তাই নিখরচায় চিকিৎসা সম্ভব নয়।
অন্যদিকে সরকারি হাসপাতালগুলির ক্ষেত্রে কোনও রোগী এলে তাঁকে ইনডোরে ভর্তি করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী বা অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রকল্পের কোনও কার্ড থাকলে তার আওতাতেও আনতে হবে। মূলত রোগীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকা বাধ্যতামূলত। কেন্দ্রীয় হেলথ স্কিম বা ইএসআই কার্ড থাকলেও তার আওতায় রোগীকে আনতে হবে।
যদি রোগীর পরিবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আনতে ভুলে যান সেক্ষেত্রে আধার কার্ডের নম্বর ধরে রোগীকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় ভর্তি করার কথা বলা হয়েছে। যদি কোনও কার্ড না থাকে তা হলে হাসপাতাল থেকেই সক্রিয় হয়ে রোগীর কার্ড ইস্যু করার কথাও বলা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ঘোষণা। বিনামূল্যে চিকিৎসার ক্ষেত্রে যদি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আসে তা হলে কিন্তু এই বিমা প্রকল্পের রাজস্ব রাজ্য সরকারের ঘরেই উঠবে।