কলকাতা: ভূপৃষ্ঠের ৩৩ ফুট নীচ দিয়ে ছুটবে মেট্রো (Kolkata Metro)। গঙ্গার নীচের সুড়ঙ্গ দিয়ে যাতায়াত করার সময় শ্বাসকষ্ট হবে না তো? হবে না তো দমবন্ধ? ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ এগোতেই এই প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছিল বেশ কিছুদিন ধরে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিকভাবে হাওয়া চলচল করার জন্য থাকছে OTE বা ওভার ট্র্যাক এক্সহস্ট ফ্যান, ইউপিএস ফ্যান। এগুলির মাধ্যমে বাইরের পরিশুদ্ধ হাওয়া সুড়ঙ্গের ভিতরে নিয়ে আসা হয়। যাতে অক্সিজেনের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু, ৩৩ ফুট মাটির নীচে শুধু হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা নয়। থাকছে অটোমেটিক প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর-ও। সূত্রের খবর, কবি সুভাষ থেকে কলকাতা বিমানবন্দর করিডরেও এই PSD বা প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রেল কর্তারা।
ট্রেন লাইন থেকে প্ল্যাটফর্মকে পৃথক করে পিএসডি বা অটোমেটিক প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর। সোজা কথায়, মেট্রো এসে দাঁড়ানোর পর সেটির গেট খুললে প্ল্যাটফর্মেরও গেট খুলবে এবং যাত্রীরা ওঠানামা করবেন। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নিরাপত্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই স্বয়ংক্রিয় স্ক্রিন ডোর। তবে শুধুমাত্র মেট্রোর এই রুটেই আটকে থাকছে না PSD-র ব্যবহার। কবি সুভাষ-কলকাতা বিমানবন্দর করিডরের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে খবর।
কলকাতার মেট্রোর ব্লু লাইন অর্থাত্ কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর করিডরে ঘটেছে একের পর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই প্রবণতা বন্ধ করতে চায় রেলমন্ত্রক। প্রায় ৩০ কিলোমিটারের এই করিডরের মধ্যে দু’টি স্যাটেলাইট সিটি অর্থাৎ সল্টলেক এবং নিউ টাউনকে কলকাতার দক্ষিণ শহরতলির সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। আপাতত এই করিডরের মধ্যে সাড়ে ৫ কিলোমিটার অর্থাৎ কবি সুভাষ থেকে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় স্টেশন পর্যন্ত পরিষেবা শুরুর সিদ্ধান্ত হলেও, তা তেমন লাভজনক হবে না বলেই মনে করছেন রেল বোর্ডের কর্তারা। সে কারণেই চেষ্টা করা হচ্ছে কবি সুভাষ থেকে মোট ন’টি স্টেশনের মধ্যে মেট্রো পরিষেবা শুরু করার। অর্থাৎ বেলেঘাটা পর্যন্ত। যার মধ্যে থাকবে – কবি সুভাষ স্টেশন, সত্যজিৎ রায় স্টেশন, জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী স্টেশন, কবি সুকান্ত স্টেশন, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় স্টেশন, ভিআইপি বাজার স্টেশন, বরুন সেনগুপ্ত স্টেশন এবং বেলেঘাটা স্টেশন।
কলকাতা মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৩-এর ডিসেম্বরের শেষের মধ্যে বেলেঘাটা স্টেশন, ২০২৪-এর জুনের মধ্যে সেক্টর ফাইভ, ২০২৪-এর ডিসেম্বরের মধ্যে সিটি সেন্টার, এবং ২০২৫-এর ডিসেম্বরের মধ্যে কলকাতা বিমানবন্দর পর্যন্ত কাজ শেষ করে মেট্রো পরিষেবা শুরু করে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।