কলকাতা: নিউটাউন এনকাউন্টারে (Newtown Gangster Shootout) নিহত দুই গ্যাংস্টারের পাকিস্তান যোগ মিলল। ভুল্লারদের (Jaipal Singh Bhullar) ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে পাকিস্তানের কাপড়ের দোকানের একটি প্যাকেট। তাতে উর্দুতে লেখা রয়েছে। পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে ‘মেড ইন পাকিস্তান’ লেখা রিভলবার। ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে অত্যাধুনিক আরও অস্ত্র।
পাকিস্তান যোগের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল পঞ্জাবের ডিজিপির কথাতেই। তারা আন্তর্জাতিক ড্রাগ পাচার সঙ্গে যুক্ত। ২০১৪ সাল থেকেই কার্যত ফেরার ছিল জয়পাল সিং ভল্লার। বুধবারই সেকথা জানিয়েছেন পঞ্জাব পুলিশের ডিজিপি। তবে আড়ালে থেকেই পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, রাজস্থানে অপারেশন চালাচ্ছিল জয়পাল। ২০১০ সাল থেকে জয়পালের অপরাধ জীবন শুরু হলেও, প্রথম দিকে সে ছিল মূলত গ্যাংস্টার। পাশাপাশি ডাকাতি, ছিনতাই করত। তবে সাম্প্রতিককালে অর্থাৎ গত তিন চার বছরে সে অনেক বেশি জড়িয়ে যায় আন্তর্জাতিক ড্রাগ পাচার চক্রের সঙ্গে।
পাকিস্তান থেকে ভারতে মাদক ঢোকার সবচেয়ে বড় করিডর হচ্ছে পঞ্জাবের অমৃতসর, সীমান্ত এলাকা। সীমান্তে মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে জয়পালের ভাল সম্পর্ক তৈরি হয়। পুলিশের কথায়, ‘গ্যাংস্টার টার্ন ইন টু অ্যা ইন্টারন্যাশনার ড্রাফ মাফিয়া’ !
ড্রাগ পাচারের ফাঁকেই তার সঙ্গে পরিচিত হয় আন্তঃরাজ্য বেশ কিছু দুষ্কৃতীর। এর আগেও কলকাতায় এসেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ মনে করছে, কলকাতা এর আগে এসে থাকতে পারে জয়পাল। তবে এবার কলকাতায় আসার আগে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে গা ঢাকা দিয়েছিল। আর সে সূত্র ধরেই তাকে এবার ধরে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে পঞ্জব পুলিশের কাছে জয়পালের অবস্থানের সূত্র ছিল ইন্দপুর। কিন্তু ঘটনাক্রম অনুসারে এ বছরের মে মাস পর্যন্ত জয়পাল ভল্লার ও যশপ্রীত অবস্থান করছিল পঞ্জাবের লুধিয়ানাতেই। মে মাসে লুধিয়ানায় ভরা বাজারে দুই পুলিশ কর্মীকে খুন করে তারা। তারপর থেকেই ফেরার ছিল। গোয়ালিয়র থেকে ২৬ মে থেকে জয়পালের দুই সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, সেখানে জয়পাল ছিল। কিন্তু রেড হওয়ার খবর জানতেই পালিয়ে যায় সে। গোয়ালিয়র থেকে বলবিন্দর নামে জয়পালের সঙ্গীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা যায়, গোয়ালিয়রে বলবিন্দরের গাড়ি-বাড়ি ঠিক করে দিয়েছিল ভরত নামে এক ব্যক্তি। তাকে ট্র্যাক করে পুলিশ। ভরতকে পাওয়া যায় পাকিস্তান-পঞ্জাব সীমান্তে। তার সঙ্গে ছিল ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নম্বর প্লেটের একটি গাড়ি। তাকে দুপুরে গ্রেফতার করা হয়। জয়পালের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ভরত। অপরাধের পর বিভিন্ন জায়গায় জয়পালকে ‘লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট’ দিত ভরত। তার থেকেই জয়পালের কলকাতা যোগ সূত্র পায় পুলিশ। তারপরই সেই তথ্য শেয়ার করা হয় কলকাতা পুলিশের সঙ্গে। খবর পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অ্যাকশন নেন কলকাতা পুলিশের এসটিএফ কর্তারা।