কলকাতা: সম্প্রতি বিজেপির কয়েকজন নেতার মন্তব্যে তৃণমূল অভিযোগ তোলে, বঙ্গভঙ্গের ষড়যন্ত্র চলছে। এরপরই বঙ্গভঙ্গ বিরেধী প্রস্তাব আনা হয় বিধানসভায়। সোমবার সেই প্রস্তাব ঘিরেই রাজ্য বিধানসভায় দেখা গেল নজিরবিহীন ছবি। বঙ্গভঙ্গ বিরোধী প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে সমর্থন করা হল বিধানসভায়। শাসক ও বিরোধী দলের বিধায়করা এদিন একসঙ্গে টেবিল চাপড়ে সেই প্রস্তাব সমর্থন করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সাম্প্রতিককালে এটি এক নজিরবিহীন দৃশ্য।
২০২১-এর পর দুবার এই ইস্যুতে উত্তাল হয় বিধানসভা। বিজেপিকে ওয়াকআউট করতেও দেখা গিয়েছে এর আগে। তবে কোনও সমস্যা ছাড়াই দু পক্ষের সম্মতিতে প্রস্তাব পাশ হওয়ার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে প্রস্তাব পাশ হয়। প্রস্তাব পেশ হওয়ার পর বিরোধী দলনেতা একটি লাইন ওই প্রস্তাবে যোগ করার কথা বলেন। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘বাংলার বিভাজন চাই না। পশ্চিমবঙ্গকে যে কোনও মূল্যে রক্ষা করা হবে।’ প্রস্তাব পেশ হওয়ার পর শুভেন্দু বলেন, ‘একটি লাইন যোগ করুন। বাংলার উন্নয়নে আমরা ঐক্যবদ্ধ।’ এরপর সেই লাইনও যোগ করা হয় ওই প্রস্তাবে।
তবে এই প্রস্তাব বিজেপি আদৌ মানবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল। শান্তনু সেন বলেন, “বিজেপির বিলম্বিত বোধোদয়। বাংলা ভাগ করার মানসিকতার জন্য, মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করছে, সেটা বুঝতে পেরেই সমর্থন করেছে।” শান্তনু সেন আরও বলেন, “বিজেপির মধ্যে তো নানা মুনির নানা মত। সব নেতারা মেনে নেবে কি না, সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।”
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা সজল ঘোষ মনে করছেন, এতে শাসক দলের প্রস্তাবে সমর্থন জানানোটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়, কারণ যে কোনও মানুষই বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করবেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গকে উত্তর-পূর্ব উন্নয়ন মন্ত্রকের অংশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তারপরই বিতর্কের ঝড় ওঠে। এরপরই ঝাড়খণ্ডের সাংসদ নিশিকান্ত দুবে মালদহ, মুর্শিদাবাদকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার কথা বলেন। সেই প্রসঙ্গ টেনে সজল ঘোষ বলেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষ সত্যিই বঞ্চিত। আর বিজেপি নেতারা বঙ্গভঙ্গের কথা বলেননি। কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল আর বঙ্গভঙ্গ এক নয়।”