কলকাতা: নুসরত জাহান বিতর্ক। আর্থিক প্রতারণার অভিযোগের ভিত্তিতে যত তথ্য় প্রকাশ্যে আসছে, ততই রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। জানা দিয়েছে, ব্যাঙ্ককর্মীদের ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগের বিষয়টি অনেক আগেই জেনেছিল গড়িয়াহাট থানা। কিন্তু প্রথমে অভিযোগ নেয়নি থানা। পরে অবশ্য আদালতের হস্তক্ষেপে অভিযোগ নেয় থানা। অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয় আলিপুর জুডিশিয়াল আদালতেও। রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, প্রতারিতদের অভিযোগে সত্যতা রয়েছে।
চলতি বছরের গত ৩০ জানুয়ারি ৬ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলিপুর আদালত অভিযুক্ত সংস্থার আট জনকে ২৩ শে ফেব্রুয়ারির দিন হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারপরও নুসরত জাহান সেই সমনে হাজিরা দেননি। ৫ এপ্রিল নুসরাত আদালতে নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন জানান, সশরীরে তাঁর পক্ষে আদালতে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তিনি ব্যস্ত। তিনি একজন সংসদ। তিনি বছরের বেশি সময় দিল্লি থাকেন। এছাড়াও কলকাতার বাইরে থাকেন। তাঁর আইনজীবী হাজির থাকবেন।
ওই আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। বিচারক স্পষ্ট নির্দেশ দেন পরবর্তী শুনানির দিন ২৭ এপ্রিল তাঁকে সশরীরে হাজির হতে হবে। সেই সঙ্গে হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ। কিন্তু তারপরেও হাজির হননি নুসরাত। ওই দিন গড়িয়াহাট থানার পক্ষ থেকে নন এক্সিকিউশন রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় আদালতে। আদালত এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিনায়ক সেন এবং বিষ্ণু চরণ দাসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। গড়িয়াহাট থানার তদন্তকারী আধিকারিক জানান, ওই দুই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি। তবে এই মামলায় আদালতের নির্দেশে রাকেশ সিং-কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তিনি বর্তমানে জামিন আছেন।
অর্থাৎ সেভেন সেন্সেস কোম্পানিতে নুসরতের পাশাপাশি আরও যে কয়েকজন ডিরেক্টর ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারি হয়। গ্রেফতার করা হয় নুসরতের সঙ্গী রাকেশ সিংকে। তবুও কেন নুসরতের বিরুদ্ধে কড়া কোনও পদক্ষেপ নয়, তা নিয়েই প্রশ্ন থাকছে।
যদিও এই অভিযোগকে গুরুত্বই দিতে চাইছে না তৃণমূল। সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি এসব ব্যাপার বিশ্বাসও করি না। আমি মনে করি না নুসরত এই ধরনের কোনও কাজের সঙ্গে যুক্ত।”