কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনে উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল হাইকোর্টে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নেতৃত্বে অনুসন্ধান কমিটির রিপোর্টেও বিডিওকে সাসপেন্ড করার সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্ট দেখার পর হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার একক বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। একক বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও। মামলা ওঠে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানির শুরুতেই বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় প্রশ্ন করেন, ‘বিচার চাইছেন নিজে! অন্যদের বিচার দিয়েছেন কি?’
দ্বিতীয়ার্ধের শুনানির সময়েও কড়া কড়া প্রশ্ন করেন বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়। বিডিওর উদ্দেশে বলেন, ‘সংবিধান আপনাকে বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছিল। আপনি সেটা পালন করেননি। আপনি শপথ নিয়েছিলেন। সেটা রক্ষা করার কর্তব্য নয় আপনার? আপনার বিরুদ্ধে প্রতারণার (চিটিং-এর) অভিযোগ আছে।’ এদিন ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, উলুবেড়িয়া-১ ব্লকের বিডিও সংক্রান্ত মামলায় একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর আপাতত কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না। মামলাটি আবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার একক বেঞ্চেই ফেরত পাঠিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ এও জানিয়ে দিয়েছে, মামলায় চূড়ান্ত রায় একক বেঞ্চই দেবে।
উল্লেখ্য, এদিন মামলাকারী বিডিও-র পক্ষে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, যে অনুসন্ধান কমিশন গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিশনের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁর মক্কেলের কথা আদালতে শোনা হয়নি। সেই কারণে, আপাতত যাতে রক্ষাকবচ দেওয়া হয়, সেই আর্জি নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন। বিডিও-র আশঙ্কা, তাঁর চাকরির উপর ছেদ পড়তে পারে। তবে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, আদালত নিজে থেকে তদন্ত করে না। তাই এই কমিশন বা কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। কমিশনের দেওয়া রিপোর্টেই আদালত ভরসা করবে বলেও পর্যবেক্ষণ বিচারপতির। সেই কারণে মামলাটি আবার একক বেঞ্চেই ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।