কলকাতা : মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজ করত। কিন্তু এরপর লকডাউনে কাজ হারিয়েছিল। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরেও নতুন করে আর কোনও কাজ জোটাতে পারেনি। তাই পলাশ পোদ্দারকে বেছে নিতে হয়েছিল ‘বিকল্প উপার্জন’-এর রাস্তা। এটিএম লুঠ। সল্টলেক এলাকায় পরপর বেশ কয়েকটি এটিএম লুঠ করার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সে। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজ হারানোর পর উপার্জনের পথ খুঁজতেই এই অপরাধের রাস্তা বেছে নিয়েছিল পলাশ। বৃহস্পতিবার রাতে নাকা চেকিং চলাকালীন পুলিশ পাকড়াও করে তাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের কাছে প্রথম অভিযোগ আসে ১ অগস্ট। সল্টলেকের সিডি ২৮ নম্বরে একটি এটিএম মেশিন ভেঙে লুঠের চেষ্টার অভিযোগ আসে পুলিশের কাছে। তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। খতিয়ে দেখা হয়েছিল সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ। সেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং তার বাইকটিকে চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। সেই মতো তদন্তও এগোতে থাকে। আর এরই মধ্যে পুলিশের কাছে আরও একটি অভিযোগ আসে। এবার সল্টলেকের বিবি ব্লকে। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আবারও। তদন্তের গতি আরও বাড়ায় পুলিশ। তৈরি করা হয় একটি স্পেশাল টিম। তদন্তে নেমে দেখা যায় দ্বিতীয় ওই ঘটনায় এটিএম কাউন্টারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে এটিএম-এর সিসিটিভি ক্যামেরাতে কালো রঙের স্প্রে করে দেওয়া হয়েছিল।
অভিযুক্তদের ধরতে আরও বাড়ানো হয় পুলিশি নজরদারি। বিশেষ নাকা চেকিং চালানো শুরু হয় সল্টলেকের বিভিন্ন জায়গায়। আর তাতেই সাফল্য। বৃহস্পতিবার রাতে সল্টলেকের পিএনবি মোড় এলাকা থেকে নাকা চেকিং-এর সময় একটি বাইক দেখতে পায় পুলিশের। এই বাইকটি হল আগে সিসিটিভি ক্যামেরায় চিহ্নিত হওয়া বাইকটি। তাতেই গ্রেফতার করা হয় পলাশ পোদ্দারকে। অভিযুক্তের বাড়ি নাগেরবাজার থানা এলাকার সাতগাছিতে। তার কাছ থেকে ধাতব জিনিস কাটার জন্য বিশেষ যন্ত্রও উদ্ধার হয়। পরবর্তীতে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ে পলাশ অপরাধের কথা স্বীকার করে নিয়েছে বলেই খবর। এই ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িয় রয়েছে কি না, বা কোন কোন জায়গা এমন লুঠের চেষ্টা চালানো হয়েছে, সেই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।