Garden Reach Money Recover: ‘কান টানলেই মাথা আসবে’, গার্ডেনরিচ কাণ্ডে ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্ব খাড়া বিরোধীদের

TV9 Bangla Digital | Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Sep 11, 2022 | 7:11 AM

Garden Reach Money Recover: তবে যে নিসার খানের বাড়ি থেকে এই বিপুল টাকা উদ্ধার হয়েছে তার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সামস ইকবালের বাড়ি। ফলত, বিরোধীদের প্রশ্ন শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের চোখ এড়িয়ে এইভাবে কোটি-কোটি টাকার প্রতারণা ব্যবসা চালানো সম্ভব কি?

Garden Reach Money Recover: কান টানলেই মাথা আসবে, গার্ডেনরিচ কাণ্ডে প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া বিরোধীদের
উদ্ধার টাকা এভাবেই সাজানো

Follow Us

কলকাতা: শনিবারের বারবেলা। গোটা বাংলা কার্যত তাজ্জব বনে আরও একবার। বন্দর এলাকার এক ব্যবসায়ীর বাড়ির খাট খুলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি উদ্ধার করে কড়কড়ে ১৭ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। এই ছবিটাই মনে করিয়ে দিয়েছিল কয়েক মাস আগের ঘটনার চিত্র। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় কোটি টাকা। সেই সময় জড়িয়ে গিয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতির তত্ত্ব। এরপর গতকালের ঘটনায় প্রভাবশালী তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারী সংস্থা থেকে বিরোধী দলগুলি।

মূলত, মাস দেড়েক আগে এক পড়ন্ত বিকেলে অর্পিতার বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল কয়েক কোটি টাকা। অভিযোগ ওঠে ওই টাকাগুলি নিয়োগ দুর্নীতির ঘুষের টাকা। যার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল সাধারণ মধ্যবিত্ত বাড়ির ভবিষ্যৎ। গার্ডেন রিচের ব্যবসায়ী নিসার খানের বাড়ি থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে সেই টাকাও কিন্তু সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার টাকা। ইডির দাবি, মোবাইল গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে লোভের ফাঁদে ফেলে দিনের পর দিন কোটি-কোটি টাকা প্রতারণা করা হয়েছে। যদিও রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, এই রাজ্যে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে দিতে চায় না বিজেপি। তাই এজেন্সি লাগিয়ে তাদের বার্তা দেওয়া হয়েছে। ‘আইটি রেড, ইডি রেড করে বোঝাতে চাইছে ব্যবসা বাংলায় করো না। ব্যবসা করতে গেলে আমাদের রাজ্যে চলে এসো। এখানে থাকলে আমরা এইভাবে ব্যবসায়ীদের আক্রান্ত করব। এর মাধ্যমে বাংলার অর্থনীতিকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আমার মনে হয়।’

এ দিকে, মন্ত্রীর বক্তব্যের সরাসরি প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি তারা আমির খানের প্রভাবশালী তত্ত্বকেও সামনে ফেলেছে। বিজেপি নেতা শমিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘আশ্চর্যজনক ভাবে আমার মনে হয় স্বাধীন ভারতের কোনও মন্ত্রী সরাসরি সাংবাদিক সন্মেলন করে বলে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিকে ধ্বংস করার চক্রান্ত তৈরি হয়েছে রেড-রেড-আর রেড করে। আর বলার সময় বললেন, ব্যক্তিগতভাবে আমার এটা মনে হতে পারে।’

বিজেপির থেকে এক কদম এগিয়ে সিপিএম-কংগ্রেসের সরাসরি অভিযোগ, তৃণমূল সরকারের আমলে বাংলা লুটেরাদের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘নিসার খান না কী নাম, গার্ডেনরিচ, পরিবহণ ব্যবসায়ী বলা হচ্ছে। তাঁর বাড়ি থেকে নাকি কোটি কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। কোটির নীচে গল্পই নেই। মাদক ব্যবসায়ী, সেখানেও কয়েক কোটি। অনুব্রত কোটি কোটি, পার্থবাবু এবং তাঁর বন্ধু বান্ধব আপাতত একজন তাতে ৫০ কোটি। পরিবহণ মন্ত্রী যিনি ছিলেন তাঁর নাম ফিরহাদ হাকিম। এখন কী একজন চক্রবর্তী মন্ত্রী হয়েছেন। তা পরিবহণ মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ নাকি নিসার খান।’ অপরদিকে, কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, ‘পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল নেতার ঘরে ঢুকলেই টাকা। পার্থবাবুর বিষয় দেখা গেল। থরে-থরে টাকার নোট উদ্ধার। দিদি বলবেন আমার ওগুলো কবিতার বই ছিল। বাংলার মানুষের কাছে দিদির চেহারা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’

বিরোধীদের শনিবার যেখানে কোটি-কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে সেটা মূলত বন্দর এলাকা। ফিরহাদ হাকিমের নির্বাচনী কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। সেই বিষয়ে যদিও ফিরহাদ বলেছেন, ‘ফিরহাদ হাকিম এদিন বলেন, “ওখানে পোর্ট এলাকায় তো বহু ব্যবসায়ী আছে। তাদের সকলকে চেনা আমার দায়িত্ব নাকি? আমি কি ঠেকা নিয়ে রেখেছি। প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী তো, তার আগেও একজন ছিলেন। তারও ঘনিষ্ঠ? এগুলো পাগলের মতো কথাবার্তা। পরিবহণ মন্ত্রী সব জানবেন নাকি? আমার আগে যে ছিল তাঁরও কি ঘনিষ্ঠ নাকি?’

তবে যে নিসার খানের বাড়ি থেকে এই বিপুল টাকা উদ্ধার হয়েছে তার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সামস ইকবালের বাড়ি। ফলত, বিরোধীদের প্রশ্ন শাসকদলের জনপ্রতিনিধিদের চোখ এড়িয়ে এইভাবে কোটি-কোটি টাকার প্রতারণা ব্যবসা চালানো সম্ভব কি?

 

 

 

 

Next Article