কলকাতা : মাস খানেক আগে দিল্লি গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এরপর বাম-কংগ্রেস যখন সেটিং তত্ত্ব সামনে আনতে শুরু করেছিল, তখন বিজেপি দাবি করেছিল, সেটিং হলে অনুব্রত মণ্ডলেরা জেলে যেতেন না। আর এবার সরাসরি মমতার মুখে মোদীর ‘প্রশস্তি’ শুনে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে গেরুয়া শিবির। বিজেপির দাবি, দলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তথা দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বাঁচাতেই এ ভাবে মোদীর প্রশংসা করছেন মমতা।
সোমবার বিধানসভায় কেন্দ্রীয় সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। তাঁর দাবি, এর পিছনে রয়েছে বিজেপির ষড়যন্ত্র। তবে এতে মোদীর কোনও ভূমিকা আছে বলে মানতে নারাজ তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী এ সব করেছেন বলে বিশ্বাস করি না। প্রধানমন্ত্রীকে কিছু বলতে চাই না।” পরে তিনি আরও বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী আপনি এদের সামলান। আপনাকে এখানে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করতে বলেন এঁরা।”
এ ভাবে বিজেপিকে ‘কাঠগড়ায়’ তুলে মোদীকে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়ার কী অর্থ তা নিয়েই সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। এই প্রসঙ্গে এ দিন বিজেপি অন্যতম মুখপাত্র আরপি সিং প্রশ্ন তোলেন, কেন মোদীকে ক্লিন চিট? অভিষেক বাঁচানোর জন্য? কেন্দ্রীয় সংস্থার বিরুদ্ধে যে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছে বিধানসভায়, সেই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা বলেন, ‘এই সব প্রস্তাব আনা হয়েছে পার্থ ও অনুব্রত বিপাকে পড়ায়।’
একই সুরে কথা বলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, এ বাবে মোদীর প্রশংসা করেও কোনও লাভ হবে না। তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিকে কোনও ভাবেই আমল দেন না, জিরো টলারেন্সে বিশ্বাস করেন। মোদীর প্রশংসা করেও শাস্তির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না বলে দাবি করেছেন তিনি।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দাবি, শাসক দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বাঁচাতেই মোদীর প্রশংসা করেছেন মমতা। একই সঙ্গে সেটিং তত্ত্বের উল্লেখ করে অধীর বলেন, নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির যে সেটিং হয়েছিল দিদি আর মোদীর মধ্যে, তারই প্রতিফল দেখা যাচ্ছে।
কেন বিজেপি আক্রমণ করা হলেও মোদীকে ছাড় দেওয়া হল, এই প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নানা সময়ে নানা রকম তথ্য আসে। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয় সেই সব তথ্যের ভিত্তিতে কাল ওই কথা বলেছেন।