কলকাতা: ভোটের ঘণ্টা বাজতেই রাজ্য-রাজনীতিতে শুরু চাপান-উতোর। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শাসক দলের বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে। তবে কোনও অবস্থাতেই ভোটের ময়দান থেকে যাতে কেউ সরে না আসেন, সে ব্যাপারে দলের কর্মীদের বার্তা দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। সব বাধা উপেক্ষা করে অবিলম্বে মনোনয়ন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। মনোনয়ন দেওয়ার সময় কী কী করতে হবে, সেই নির্দেশাবলী পিডিএফ (PDF) আকারে পদ্ম শিবিরের তরফে দলীয় কর্মীদের পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আজ, শুক্রবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। ১৫ জুন পর্যন্ত চলবে মনোনয়ন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগামী ৮ জুলাই হবে ভোটগ্রহণ। সূত্রের খবর, সেই ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার রাতেই রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে নির্দেশ পৌঁছেছে জেলার নেতাদের কাছে। মনোনয়ন পত্র কী করে জমা দিতে হবে, সঙ্গে কী কী নথি সেই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে ওই পিডিএফে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ, গ্ৰাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীদের প্রতীক দেবেন দলের জেলা সভাপতিরা আর জেলা পরিষদের প্রার্থীকে প্রতীক দেবেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও আদালতে আইনি লড়াইয়ের জন্য অপেক্ষা না করে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর আদালতের বিষয়টা দেখবে রাজ্য নেতৃত্ব, এমনটাই জানানো হয়েছে। যেখানে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারবে না, সেখানে অন্য দলের প্রার্থী বা নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব।
বেশ কিছু জায়গা থেকে ইতিমধ্যেই অভিযোগ এসেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। যেমন, মথুরাপুরের বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, তাঁদের বাড়িতে বাড়িতে কেউ ফেলে দিয়ে গিয়েছে হুমকি চিঠি। প্রার্থী দিলে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হবে, বিজেপিকে সমর্থন করলে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে, এমনই সব কথা লেখা রয়েছে সেই চিঠিতে। যদিও ওই চিঠির সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা।
দু’এক দিনের মধ্যেই বৈঠকে বসবে বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। সেখানেই পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে বলে সূত্রের খবর। মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েই দ্রুত প্রচার, সভা, দেওয়াল লিখনে জোর দিতে বলা হয়েছে বিজেপি নেতাদের। সুতরাং নির্বাচনকে সামনে রেখে আপাতত বিজেপির দুটো বিষয়েই মনোনিবেশ করছে- মনোনয়ন ও আইনি লড়াই।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রবল সন্ত্রাস ও কারচুপির অভিযোগ উঠেছিল শাসক দলের বিরুদ্ধে। এবার তাই প্রথম থেকেই শান্তিপূর্ণ ভোটের দাবিতে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার কথাও বলছেন বিরোধীরা। যদিও নিরাপত্তার বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাব কিছু জানায়নি কমিশন।