কলকাতা: গ্রেফাতারির পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) পাশে দাঁড়ায়নি দল। তবে বারবার অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Trinamool Supremo Mamata Banerjee)। “কেষ্ট যতদিন ফিরে না আসছে, লড়াই আরও তিনগুণ বাড়বে। বীরের সম্মান দিয়ে কেষ্টকে জেল থেকে বের করে আনতে হবে।” কয়েকদিন আগে নেতাজি ইন্ডোরে এ কথা বলতে শোনা গিয়েছিল মমতাকে। কিন্তু, এবার দুর্নীতি ইস্যুতে মুখ খুলতে গিয়ে একইসঙ্গে পার্থ-অনুব্রতর নাম নিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhisekh Banerjee)। বললেন, “ব্যক্তিস্বার্থে কেউ যদি দলকে ব্যবহার করে দল তাঁর পাশে দাঁড়াবে না।”
জলপাইগুড়ির মালবাজারে চা শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অভিষেক বলেন, “আমি যখন ১২ জুলাই এসেছিলাম তখন তো অনুব্রত মণ্ডল বা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি-সিবিআই ধরেনি। তাও আমি নতুন তৃণমূলের কথা বলেছিলাম। যদি কেউ কোনওরকম ভুল করে, ব্যক্তি স্বার্থে দলকে ব্যবহার করে তবে দল তাঁর পাশে দাঁড়াবে না। যদি কেউ দলকে ভাঙিয়ে, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে, ঠকিয়ে, নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে রাজনীতি করে দল তাঁর পাশে দাঁড়াবে না। রাজ্য নেতা থেকে বুথ স্তরের নেতা সবাইকে বলে যাচ্ছি।” এদিকে কিছুদিন আগেই কলকাতায় নতুন তৃণমূলের আগমণের বার্তা দিয়ে একাধিক পোস্টার পড়তে দেখা যায়। যাতে ছিল খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। যা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে বিস্তর চাপানউতর তৈরি হয়। নতুন তৃণমূল আদপে কী তা নিয়েও বাড়তে থাকে জল্পনা। এদিন মালবাজারের সভায় ফের অভিষেকের মুখে শোনা গেল সেই নতুন তৃণমূলে কথা।
অভিষেক বলেন, “আমার কথার পরেই নতুন তৃণমূল নিয়ে অনেক জল্পনা হয়েছে। অনেকে অনেক রকম লিখছে, বলছে, দেখাচ্ছে। তারমানে কী পুরনো তৃণমূল বাদ? আমি তো বলিনি পুরনো তৃণমূল বাদ। নতুন তৃণমূল মানে মানুষ যেভাবে তৃণমূলকে দেখতে চাইছে, তৃণমূলকে সেভাবে তৈরি করা, প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমরা বদ্ধ পরিকর। এই যে নতুন ব্লক, টাউন কমিটি বেরিয়েছে আপনারা দেখেছেন কাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কাদের ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে।” নতু তৃণমূলের অভিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বার্তা দেন পঞ্চায়েত ভোট নিয়েও।
এদিন অভিষেক আরও বলেন, “আগামীদিনে পঞ্চায়েতেও দেখবেন শান্তিপূর্ণ অবাধ নির্বাচন হবে। আমরা আমাদের কথা নিয়ে মানুষের কাছে যাব। বিরোধীরা বিরোধীদের কথা নিয়ে মানুষের কাছে যাবে। মানুষ একপক্ষকে গ্রহণ করবে, একপক্ষকে বর্জন করবে। ২০১১ সালে সিপিএমকে সরিয়ে যে তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে লড়াই করেছিল সেই তৃণমূলকে মানুষ দেখতে চায়। শ্রমিকের দাবি-দাওয়া নিয়ে, কৃষকের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় যাঁরা আন্দোলন করে সেই তৃণমূলকে মানুষ দেখতে চায়। সেই তৃণমূলকে মানুষ দেখতে চায় যে তৃণমূল খাদ্যসাথী, সবুজসাথী, কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডারে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ফর্ম ফিলাপ করে দিয়ে তাঁদেরকে সাহায্য করে।”