Partha Chatterjee Arpita Mukherjee: ‘অপা’র কালো টাকা কি ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ডে’র ব্যবসাতেও খাটত? তদন্তে ইডি

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Aug 07, 2022 | 4:37 PM

Partha Chatterjee Arpita Mukherjee: একের পর এক ভূতুড়ে কোম্পানির ভূতুড়ে লেনদেনের সূত্র ধরে এগোচ্ছেন গোয়েন্দারা।

Partha Chatterjee Arpita Mukherjee: অপার কালো টাকা কি ব্ল্যাক ডায়মন্ডের ব্যবসাতেও খাটত? তদন্তে ইডি
গ্রাফিক্স - টিভি নাইন বাংলা

Follow Us

সিজার মণ্ডল: অপা- র দুর্নীতির কালো টাকা কি কয়লার ব্যবসাতেও? শেল কোম্পানির সূত্র ধরে এমনটাই জোরাল সন্দেহ ইডি গোয়েন্দাদের।
তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী ইতিমধ্যে আদালতকে জানিয়েছেন অনন্ত ‘টেকস ফ্যব প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানির কথা। ওই কোম্পানি থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার এবং অর্পিতার কাছে টাকা গিয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।

সেই সূত্র ধরে টিভি নাইন বাংলার অন্তর্তদন্তে উঠে আসে, ‘অনন্ত টেক্স ফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির’ ১০০ শতাংশ শেয়ার হোল্ডার বর্তমানে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর কোম্পানি ‘ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ওই কোম্পানির ১০০ শতাংশ শেয়ারের মালিক ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মেয়ে এবং তাঁর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য।

এই ‘অনন্ত টেক্স ফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেডের’ নথি অনুযায়ী তাঁর দুই ডিরেক্টর মৃন্ময় মালাকার এবং রনেশ কুমার সিং। রেজিস্টার অব কম্পানির নথি অনুসারে মৃন্ময় মালাকারের বাড়ি তেঘরিয়ায়। একটা খুব সাদামাটা আবাসনের অতি সাদামাটা মধ্যবিত্ত চেহারার একটি ফ্ল্যাট। সেখানে গিয়ে খোঁজ মিলল মৃন্ময় মালাকারের।

TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দেন, ওই তিনটে কোম্পানি অর্থাৎ অনন্ত টেক্স ফ্যাব, ভিউ মোর হাইটস প্রাইভেট লিমিটেড এবং কালী ফেব্রিক্সের ডিরেক্টর তিনি নন। তাহলে যে নথি উদ্ধার হয়েছে, তাতে ডিরেক্টর হিসাবে তাঁর রেশন কার্ড থেকে শুরু করে প্যান.. কেন তাঁর নামে? শুধু তাই নয়, টিভি নাইন বাংলার হাতে যে সমস্ত নথি এসেছে, তাতেও দেখা যাচ্ছে ‘অনন্ত টেক্স ফ্যাব কোম্পানির’ বিভিন্ন এজিএম থেকে শুরু করে ব্যালেন্স সিট এবং অন্য নথিতেও মৃন্ময় মালাকারের সই রয়েছে।

বিপাকে পড়ে মৃন্ময়ের স্বীকারোক্তি, তাঁর অফিস থেকে অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ওই সমস্ত কাগজে সই করতে বলেছিলেন। তাই তিনি সই করেছিলেন। মৃন্ময় মালাকারের কাছ থেকেই জানা যায়, গত ১৭ বছর ধরে মৃন্ময় মালাকার ‘গোদাবরী কমোডিটিস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। মূলত তিনি অফিস জব করতেন। অফিসের বিভিন্ন নথিপত্র ঠিক করে রাখা, অফিসের পরিভাষায় যাকে বলা হয় অপারেশনস টিম, তারই সদস্য ছিলেন মৃন্ময় মালাকার।

মৃন্ময় জানান, তাঁদের কোম্পানি কয়লা কেনাবেচার ব্যবসা করে। বিভিন্ন কোলিয়ারি থেকে তাঁরা নিলামে কয়লা কেনেন এবং সেটা আবার বিক্রি করেন।
টিভি নাইন বাংলায় প্রশ্নর মুখে মৃন্ময় মালাকার স্বীকার করেন, তাঁর অফিস অর্থাৎ ‘গোদাবরী কমোডিটিস প্রাইভেট লিমিটেডের’ মালিকদের সঙ্গে যোগ রয়েছে মনোজ জৈনের। তিনি ৮ নম্বর যামিনী রায় লেনের বাসিন্দা। তাঁর ওই বাড়ির ঠিকানাতেই নথিভুক্ত ‘ভিউম হাইটস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে একটি শেল কোম্পানি। তাতে সন্দেহ হয় ইডি-র।

এই কোম্পানির ডিরেক্টর হিসাবে যে দেবাশিস দেবনাথের নাম রয়েছে, তিনিও স্বীকার করেছিলেন তিনি মনোজের কাছে কাজ করেন। তিনি আবার ‘গোদাবরী কমোডিটিস প্রাইভেট লিমিটেডের’ সঙ্গেও কাজ করেন, যার অন্যতম ডিরেক্টর ইন্দ্রজ মল ভূতরিয়া। উল্লেখ্য, অনন্ত টেক্সটাইপ কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হিসাবে যে কোম্পানিগুলো পাওয়া যাচ্ছে, তার একটি হচ্ছে ট্রান্স দামোদর হর্টিকালচার প্রাইভেট লিমিটেড। সেই কোম্পানিরও অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন এই ইন্দ্রাজ মল ভূতরিয়া।

একের পর এক ভূতুড়ে কোম্পানির ভূতুড়ে লেনদেনের সূত্র ধরে এগোচ্ছেন গোয়েন্দারা। অনন্ত টেক্স ফ্যাব কোম্পানির গত কয়েক বছরের ব্যালেন্স সিট দেখে রীতিমতো তাজ্জব গোয়েন্দারা। প্রত্যেক বছর এমনকি লকডাউনের সময়ও এই কোম্পানির আড়াই থেকে তিন কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। অথচ জন্ম থেকে অর্থাৎ ২০১২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত এই কোম্পানি লসে চলছে। তবে কীভাবে এত টাকার লেনদেন? ফি বছর ক্ষতিতে চলা কোম্পানির লস কীভাবে ভরাট হচ্ছে, তার বিন্দুমাত্র উল্লেখ নেই ব্যালেন্স সিটে। পুরোটাই ভূতুড়ে লেনদেন।

আর সেখান থেকেই গোয়েন্দাদের সন্দেহ আরও জোরাল হচ্ছে, যে এই ভূতুড়ে লেনদেনের মাধ্যমে কালো টাকা পৌঁছেছে একাধিক ব্যবসায়। তার মধ্যে কয়লার ব্যবসাও থাকতে পারে। ‘অপা’র অনেক কালো টাকা কয়লার কারবারেও বিনিয়োগ করা আছে বলে তদন্তকারীদের ধারণা।

Next Article