শ্রাবন্তী সাহা: এক সময় ছুটে বেড়িয়েছেন জেলা থেকে জেলা। হাতে সময় কোথায় ছিল অবসরের! এখন সামনে ‘কথামৃত’ আর ‘অখণ্ড অবসর’। বোধহয় তাই একটু বেশিই ভাবছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ভাবনায় সেই অর্পিতার জন্য। কী করছেন অর্পিতা? তিনি কী খাচ্ছেন? তাঁর জন্য আদৌ কি কেউ লড়ছেন? ইতিমধ্যেই উদ্ধার হওয়া টাকা তাঁর নয় বলে হাত ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন অর্পিতা। কিন্তু পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবিচল। অর্পিতার খোঁজ না পেয়ে আইনজীবীদের কাছে জানতে চান, অর্পিতার আইনি দিক সঠিক ভাবে সামলানো হচ্ছে কিনা!
সোমবার প্রেসিডেন্সি জেলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। সূত্রের খবর, আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার ফাঁকেই অর্পিতার খোঁজ নেন তৃণমূলের প্রাক্তন এই ওজনদার নেতা। অভিনেত্রীকে তিনি আইনি সাহায্য দেওয়ার কথা জানান বলেও খবর।
সূত্রের খবর, পার্থ তাঁর আইনজীবীকে জানিয়েছেন, প্রয়োজনে অর্পিতার আইনি সহায়তা যেন তাঁরাই প্রাথমিকভাবে দেন। এমন দাবি প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিলেন পার্থও। যদিও সেই দাবি ধোপে টেকেনি। অর্পিতাকে এই মুহূর্তে কোন সাহায্য করা মানে আরও বিপদ বাড়ানো বলেই মনে করেছেন পার্থর ঘনিষ্ঠরা।
জেলে বসেও ‘বান্ধবী’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জন্য চিন্তিত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, আগেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী সোহম বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাঙ্কশাল আদালতে সওয়াল করেছিলেন, উদ্ধার হওয়া টাকা তাঁর মক্কেলের নয়। বরং তাঁর ঘাড়েই সব দোষ চাপানোর চেষ্টা চলছে। অর্পিতার প্রাণ সংশয় রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। বাড়ানো হয়েছিল অর্পিতার নিরাপত্তাও।
প্রথমদিকে ইডি সূত্রে খবর ছিল, পার্থ তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন, তিনি অর্পিতাকে চেনেন না। কেবল নাকতলা পুজোর সময়ে দেখেছেন। তাঁর পক্ষে আদালতে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবীও। পরে অবশ্য পার্থর আইনজীবী দেবাশিস রায়ের বক্তব্য ছিল, “আমি অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্ক অস্বীকার করছি না। তবে এটাও বলব, আমার একজন পরিচিতর বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের দায়িত্ব কী আমার? কী কানেকশন আছে? আমরা ফোনে ঘন ঘন কথা বলতাম বলে?” অর্থাৎ অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার সঙ্গে যে পার্থর সম্পর্ক নেই, তা সওয়াল করেন তিনি।
চেনা-না চেনার ধন্দের মধ্যেই ‘বান্ধবী’র জন্য মন উচাটন প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রীর। প্রেসিডেন্সির পয়লা বাইশের কারা-যাপনেও তাই মন পড়ে আলিপুর সংশোধনাগারেই।