কলকাতা: এসএসসি দুর্নীতি মামলায় আজ ফের সিবিআই-এর মুখোমুখি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রাথমিক পর্বে একটা ধোঁয়াশা থাকলেও, সিবিআই হাজিরা এড়ালেন না প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আইনি রক্ষাকবচ ছাড়াই নিজাম প্যালেসে ঢুকলেন। বেলা এগারোটায় তাঁর সিবিআই দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। ঘড়ির কাঁটায় তখন ১০.২৫ মিনিট। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর নাকতলার বাড়ি থেকে বের হন। নির্ধারিত সময়ের পনেরো মিনিট আগেই বেলা ১০টা ৪৫ মিনিটেই তিনি পৌঁছে যান সিবিআই দফতরে। তবে এদিনের শুরুতে পার্থর সিবিআই হাজিরা নিয়ে একটা জলঘোলা তৈরি হয়েছিল। একটি সূত্র মারফত জানা যাচ্ছিল, পার্থ এদিন সিবিআই-কে চিঠি পাঠাতে পারেন। বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ যখন তাঁর নাকতলার বাড়িতে বেশ কয়েকজন আইনজীবী ঢোকেন, তখন ধোঁয়াশা আরও গাঢ় হয়। তাঁদের সঙ্গে এক দফা আলোচনা করেন পার্থ। সাংবাদিকরা তখন পার্থর বাড়ির বাইরে অপেক্ষারত। নাকতলার বাসভবনের বাইরে দুধ সাদা গাড়ি এসে দাঁড়াতেই, সন্দেহের অবসান। বেলা ১০.২০ মিনিটে বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলেই গাড়িতে উঠে যান তিনি। নিশ্চিত হওয়া যায়, আজই সিবিআই দফতরে যাচ্ছেন পার্থ। তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলে প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, সিবিআই হাজিরা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়ে গিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে একটি রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও রকম কড়া আইনি পদক্ষেপ না করা হয়। যদিও ডিভিশন বেঞ্চ সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। গত শুক্রবার তিনি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আর্জি খারিজের পর সোম ও মঙ্গলবার তাঁকে শীর্ষ আদালতেরও দ্বারস্থ হতে দেখা যায়নি। সেক্ষেত্রে মনে করা হচ্ছিল, সিবিআই হাজিরা এড়াবেন না পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
কেবল গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা নয়, সাম্প্রতিকতম ইস্যু শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি সংক্রান্ত যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়টিও তিনি জানতেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতিতে আদতে ‘মানি ট্রেলের’ ব্যাপার রয়েছে কি না, সেটা নিয়েও সন্দেহ দূর করতে তৎপর তদন্তকারীরা। সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হতে পারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
গত বুধবার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সে দিন চার পাতার প্রশ্নপত্র তৈরি করেছিলেন আধিকারিকরা। সম্ভবত সেই সব প্রশ্নের উত্তরে সন্তুষ্ট নন বলেই ফের তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান সিবিআই আধিকারিকরা। ওই দিনও কোনও আইনি রক্ষাকবচ ছাড়াই জেরার মুখোমুখি হয়েছিলেন পার্থ।